জম্মু: গতকাল জম্মুর সাম্বায় বিএসএফের গুলিতে খতম হওয়া তিন জঙ্গি ভারতে বড়সড় নাশকতার ছক কষেই ভারতে ঢুকেছিল। চলন্ত ট্রেন ও রেল ট্র্যাক উড়িয়ে দেওয়ার মতো নাশকতা চালানোর জন্য তারা চেইন আইইডি এবং বিশেষ এক ধরনের বিস্ফোরক তরল নিয়ে এসেছিল। ওই তরলকে বিস্ফোরক হিসেবে শনাক্ত করাটা খুবই শক্ত।


গতকাল জম্মু ও কাশ্মীরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত সংলগ্ন সাম্বায় ওই তিন জঙ্গি বিএসএফের সঙ্গে গুলি বিনিময়ে খতম হয়। এদিন সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর এক পদস্থ আধিকারিক বলেছেন, খতম তিন জঙ্গি পাঁচ বোতল তরল বিস্ফোরক ট্রাইনাইট্রোগ্লিসারিন নিয়ে এসেছিল।

বিএসএফের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল (এডিজি) তথা স্পেশ্যাল ডিজি (পশ্চিম কম্যান্ড) অরুণ কুমার বলেছেন, ভারতে বড়সড় নাশকতা চালাতে ওই তিন জঙ্গি অনুপ্রবেশ করেছিল। তাদের কাছ থেকে চেইন আইইডি এবং তরল বিস্ফোরক পাওয়া গিয়েছে। এর থেকে স্পষ্ট, রেল ট্রাক ও ট্রেন উড়িয়ে দেওয়ার মতো হামলার ছক ছিল তাদের।  তিনি বলেছেন, তিন জঙ্গি চলন্ত ট্রেনে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আগুন ধরানোর ছক কষেছিল। কেননা, চেন আইইডি এবং তরল বিস্ফোরক ট্র্যাক ওড়ানো এবং আগুন ধরানোর জন্যই ব্যবহার করা হয়।

এডিজি বলেছেন, ওই তিনজনকে খতম না করা গেলে দেশে বড়সড় হামলা চালাতে পারত তারা। তিনি আরও বলেছেন, বিএসএফের বহুস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণেই এক্ষেত্রে বড়সড় বিপদ এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ ছাড়াও সাম্বার রামগড় সেক্টরের চাম্বিলিয়াল এলাকায় গতকাল  নিহত তিন জঙ্গির কাছ থেকে বিএসএফ ৫ টি তরল জাতীয় আইইডি সহ ১০ টি আইইডি, তিনটি আইইডি ওয়েস্ট বেল্ট, পাঁচটি চেন আইইডি উদ্ধার করেছে।

বিএসএফ জম্মু ফ্রন্টিয়ার আইজি ডি কে উপাধ্যায় বলেছেন, চলন্ত ট্রেনে হামলা চালানো এবং রেল ট্র্যাক উড়িয়ে দেওয়ার জন্য মূলত চেন আইইডি ব্যবহার করা হয়। তরল বিস্ফোরক ট্রাইনাইট্রোগ্লিসারিন বিস্ফোরণ ও আগুন ধরানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।

বিএসএফ আধিকারিক জানিয়েছেন, জঙ্গিরা এখন নাইট্রোগ্লিসারিনের মতো শনাক্ত করা শক্ত, এমন সব তরল বিস্ফোরক ব্যবহার করছে।

এক বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, ডিনামাইট, বিস্ফোরক ও বিষ তৈরির জন্য নাইট্রোগ্লিসারিন ব্যবহার করা যায়। চটচটে ও পরিষ্কার এই তরল সহজেই লোশন বা শ্যাম্পুর বোতলে লুকিয়ে রাখা যায়।

উল্লেখ্য, জম্মু ও পঠানকোট রেলওয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিমি দূরে। অতীতেও জম্মু-সাম্বা-কাঠুয়ায় ট্রেনকে নিশানা করে অনেক হামলাই চালানো হয়েছে।  এ প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে, ২০১৫-র ২৭ জুলাই তিন বন্দুকবাজ সেনার উর্দিতে একটি বাসে গুলি চালায় এবং পঞ্জাবের গুরদাসপুর জেলার দিনানগর থানায় হামলা করে। তার আগে তারা অমৃতসর-পঠানকোট রেল লাইনে পাঁচটি চেন আইইডি রেখে গিয়েছিল। রেলের এক ট্র্যাকম্যানের চোখে বোমাগুলি ধরা পড়ায় অল্পের জন্য বড়সড় বিপদ রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছিল।