চণ্ডীগড়: পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই মদতপুষ্ট একটি জঙ্গি নেটওয়ার্ক ফাঁস করা হয়েছে বলে দাবি করল পঞ্জাব পুলিশ। এই চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।


রবিবার, পঞ্জাব পুলিশ এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, তিন অভিযুক্ত—গুরদয়াল সিংহ, জাগরুপ সিংহ ও সতবিন্দর সিংহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, এই তিনজন সরাসরি আইএসআই-মদতপুষ্ট ইন্টারন্যাশনাল শিখ ইউথ ফেডারেশন (আইএসওয়াইএফ)-এর সক্রিয় সদস্য।


অভিযোগ, এই তিনজনই আইএসআই-এর হাতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। পুলিশের দাবি, জেরায় এরা স্বীকার করেছে, ভারতে নাশকতা চালানোর জন্য তারা পাকিস্তান থেকে আইএসওয়াইএফ-এর প্রধান লখবীর রোড-এর থেকে নির্দেশ পেয়েছে। পুলিশের আরও দাবি, এই তিনজনের মধ্যে প্রধান অপারেটিভ হল গুরদয়াল। জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গেও তার যোগাযোগ রয়েছ।


পুলিশ জানায়, জেরায় জাগরুপ স্বীকার করে, রেল লাইনে নাশকতা চালানোর জন্য তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে আইএসআই। গত ২১ মে, অমৃতসরে আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র বাজেয়াপ্ত করে বিএসএফ।


সেই সময় মান সিংহ ও শের সিংহ নামে দুই সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা এসেছিল ওই অস্ত্রের হেফাজত নিতে। জানা গিয়েছে, ওই অস্ত্র আইএসওয়াইএফ-এর জন্য আনা হচ্ছিল।


জেরায় উঠে এসেছে, লখবীরের সঙ্গে গুরদয়ালের পরিচয় করিয়ে দেয় ভারতীয় বংশোদ্ভূত জার্মান বাসিন্দা বলবীর সিংহ। দীর্ঘদিন গুরদয়াল লাহোর ক্যান্টনমেন্ট অঞ্চলে ছিল। গত ৬-৭ বছরে বহুবার গুরদয়াল ও লখবীরের যোগাযোগ ও দেখা হয়েছে বলেও দাবি তদন্তকারীদের।


পঞ্জাব পুলিশের মতে, পাকিস্তানে জাঠায় (শিখ ধর্মীয় গোষ্ঠী) অংশগ্রহণ করার নামে জাগরুপের জন্য ভিসার বন্দোবস্ত করে গুরদয়াল। ২০১৬ সালের নভেম্বরে দুজনে লাহৌরে গিয়ে লখবীরের সঙ্গে দেখা করে।


পুলিশকে জাগরুপ জানায়, চোখ বেঁধে তাঁকে এক অজ্ঞাতপরিচয় জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে উপস্থিত ছিল লখবীর। ওখানে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। একে-৪৭ রাইফেল থেকে শুরু করে ছোট অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। পাশাপাশি, রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে কী ভাবে নাশকতা করা যায়, সেই প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।


পুলিশ জানিয়েছে, তৃতীয় ধৃত সতবিন্দরও বাকি দুজনের মতোই সক্রিয় সদস্য। তিন ধৃতের থেকে বেশ কয়েকটি পিস্তল ও প্রচুর গুলি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। গুরদয়াল ও বলবীরের আগে থেকেই জঙ্গি কার্যতলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছিল। তাদের বিরুদ্ধে ১৯৮৮ ও ১৯৯২ সালে বিভিন্ন অপরাধমমূলক মামলাও দায়ের হয়।