তিরুঅনন্তপুরম: জোড়া খুন এবং একটি খুনের চেষ্টার অভিযোগে কেরলের এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিল আদালত। একইসঙ্গে এই অপরাধের সঙ্গী তথা তার মহিলা সহকর্মীকে যাবজ্জীবন সাজায় দণ্ডিত করা হয়েছে।


ঘটনায় প্রকাশ, ২০১৪ সালে নিনো ম্যাথু নামে ওই তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর বিরুদ্ধে তারই সহকর্মী অনু শান্তির তিন বছরের শিশুকন্যা স্বস্তিকা ও ৬০ বছরের শ্বাশুড়ি ওমানাকে নির্মমভাবে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। শুধু তাই নয়, অনুর স্বামী লিজেশকেও হত্যার চেষ্টা চালায় নিনো। এই গোটা ঘটনায় নিনোকে সাহায্য করে অনু।

পুলিশ জানিয়েছে, প্রথমে অনুর বাড়িতে ঢুকে প্রথমে স্বস্তিকা ও ওমানাকে হত্যা করে নিনো। এরপর অনুর স্বামীকে হত্যা করার জন্য দুজনেই প্রায় আধ-ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিল। লিজেশ আসতেই তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে অনু ও নিনো। কোনওক্রমে, নিজের প্রাণ বাঁচিয়ে বাড়ির বাইরে এসে প্রতিবেশীদের জানালে, তাঁরা দুজনকে আটক করেন।

এই অপরাধকে বিরলের মধ্যে বিরলতম আখ্যা দিয়ে মুখ্য দায়রা বিচারক ভি শেরসি জানান, যে ভাবে হত্যা করা হয়েছে, তা অত্যন্ত নির্মম এবং হাড়-হিম করা। তিনি আরও জানান, মহিলা বলে অনুকে কম শাস্তি দেওয়ার কোনও কারণ নেই। বিচারক বলেন, নিজের দুধের শিশুকে হত্যা করিয়ে অনু মাতৃত্বকে অপমান করেছেন।

মামলার শুনানিতে পুলিশ মোট ৪৯ জন সাক্ষীকে পেশ করেছে। ৮৫টি নথি পরীক্ষা করা হয়েছে। পাশাপাশি, ৪১টি সামগ্রীকে প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হয়েছে আদালতে। এছাড়া, ম্যাথুর ল্যাপটপ থেকে প্রাপ্ত ভিডিও ফুটেজও এই মামলায় প্রমাণ হিসেবে পেশ করা হয়।

নিনোকে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মূল অপরাধী উল্লেখ করে তাকে সর্বোচ্চ ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে, অপরাধে সঙ্গ দেওয়ার জন্য অনুকে যাবজ্জীবন সাজা দেন বিচারক। পাশাপাশি, দুই অপরাধীই পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আদালত নির্দেশ অনু এবং নিনোকে দিয়েছে লিজেশকে ৫০ লক্ষ এবং তাঁর বাবা তথা অনুর শ্বশুর থাঙ্কাপ্পন চেত্তিয়ারকে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার।