নেল্লোর: জ্যোতিষী বলেছে, মেয়ে জন্মাবে এবারও। ঘরে তো একটা দেড় বছরের মেয়ে রয়েছে, আবার মেয়ে কেন? তার লেখাপড়া, বিয়ের খরচ আছে, অথচ আমদানি নেই এক পয়সা। এমনকী মরলে মুখে আগুনটুকুও দিতে পারবে না। ক্ষিপ্ত শাশুড়ি উদ্বেগ কমাল বৌমার পেটে অ্যাসিড মেরে। অলিম্পিকে সিন্ধু, সাক্ষীরা দেশবাসীর মুখ বাঁচানোর পর এই পুরস্কার তুলে দেওয়ার হল দেশের মেয়েদের হাতে।

অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরের ঘটনা। অ্যাসিড হামলার শিকার হয়েছেন এস গিরিজা নামে ২৭ বছরের এক মেয়ে। তিনি দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় তাঁর শাশুড়ি নাকি যায় জ্যোতিষীর কাছ থেকে জানতে, গর্ভে ছেলে আছে না মেয়ে। মেয়ে আছে জানতে পেরে শাশুড়ি, ননদ গিরিজার পেটে অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে, যাতে বাচ্চা নষ্ট হয়। প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, জ্যোতিষীর কাছ থেকে মেয়ে জন্মের ভবিষ্যৎবাণী পেয়েই গিরিজার শাশুড়ি, ননদ ঠিক করে, তাঁকে মেরে ফেলে মেয়ের জন্ম আটকাতে হবে। তাই ১৯ অগাস্ট তাঁর পেট অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেয় তারা। বিষয়টি জানাজানি হতে তাঁর শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা রুজু হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে স্বামী ও শ্বশুরকে। তবে শাশুড়ি ফেরার।

গিরিজার ওপর কী ধরনের অ্যাসিড ছোঁড়া হয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। মনে করা হচ্ছে, কেরোসিনের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে তাঁর ওপর ঢেলে দেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে খোলা বাজারে অ্যাসিড বিক্রি নিষিদ্ধ হলেও কে-ই বা আর সে নির্দেশ মানে!

ফলে কয়েকজনের মানসিক বিকৃতির খেসারত দিয়ে জন্মের আগেই মারা গিয়েছে এক শিশু। আর ৩০ শতাংশ দগ্ধ শরীর নিয়ে হতবাক গিরিজা বোঝার চেষ্টা করছেন, তাঁর না আসতে পারা সন্তানের অপরাধটা ঠিক কী ছিল।