নয়াদিল্লি: প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নাগপুরে আরএসএসের সদর দপ্তরে ৭ জুন এক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ স্বীকার করা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের মধ্যেই সঙ্ঘ পরিবারের দাবি, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে ডাকা ও তাঁর সম্মতি দানের মধ্যে কোনও অন্যায়, অস্বাভাবিকতা নেই।


সরকারি ভাবে কংগ্রেস দীর্ঘদিনের দলের পোড়খাওয়া নেতা তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির আরএসএসের আমন্ত্রণ গ্রহণ করার ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া না দিলেও দলের বেশ কিছু নেতা আপত্তি তুলেছেন। যে দল কট্টর আরএসএস বিরোধী, সঙ্ঘ পরিবার দেশের সম্প্রীতির পরিবেশ, সামাজিক সুস্থিতি বানচাল করছে বলে অভিযোগে সরব, তাদের নেতা হয়ে কী করে প্রণববাবু ওই অনুষ্ঠানে যাবেন, এটাই তাঁদের প্রশ্ন।

আরএসএস গতকালই বলেছে, রাজনৈতিক ভাবে কাউকে অচ্ছুত্ করে রাখা উচিত নয়। পাশাপাশি তারা বলেছে, ফি বছর সংগঠনের বার্ষিক অনুষ্ঠানে কোনও না কোনও উল্লেখযোগ্য নামী ব্যক্তিত্বকে তারা আমন্ত্রণ জানায়। সেই হিসাবে তারা প্রণববাবুকে ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাতে কোনও অন্যায় নেই। এমনকী পুরানো ইতিহাস টেনে রতন সারদা নামে সঙ্ঘের জনৈক সদস্য তথা লেখকের দাবি, জওহরলাল নেহরু ১৯৬২ সালে চিন, ভারত সীমান্ত যুদ্ধের সময় সঙ্ঘের স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকায় এতই খুশি হয়েছিলেন যে, তিনি দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদের ভাবনা জাগিয়ে তুলতে ১৯৬৩ সালের সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবককে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন, মাত্র দু সপ্তাহের নোটিসে সঙ্ঘের ক্যাডাররাও তাতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি এও দাবি করেন, একনাথ রানাডের মতো সিনিয়র আরএসএস কর্মকর্তাও ১৯৭৭ সালে বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়ালে ইন্দিরা গাঁধীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এমনকী জাতির জনক মহাত্মা গাঁধীও অতীতে সঙ্ঘের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন সারদা।

পাশাপাশি প্রণববাবু সঙ্ঘের আমন্ত্রণ গ্রহণ করায় আইসিসিআর চেয়ারম্যান তথা শীর্ষ বিজেপি নেতা বিনয় সহস্রবুদ্ধে এতে আরএসএস সম্পর্কে ভুল ধারণা ভাঙতে সুবিধা হবে বলে মন্তব্য করেন। বলেন, উনি আরএসএসের সদর দপ্তরে এসে সঙ্ঘের প্রতিনিধিদের সামনে ভাষণ দেবেন। এটা ইতিবাচক ব্যাপার। এতে ওনার উদারতা, গণতান্ত্রিক মানসিকতার পরিচয় মিলছে।