আজ, রবিবার দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হোমিওপ্যাথি কলেজগুলির জন্য প্রথম দফার প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হবে।
রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড আয়োজিত মেডিক্যাল জয়েন্ট পরীক্ষা সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দেওয়ার পরে এ রাজ্যের ৮৫ হাজার পরীক্ষার্থীর কাছে রবিবারের পরীক্ষার গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। যাঁরা এই পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদনপত্র ভরেননি, তাঁরা আগামী ২৪ জুলাই আর একটি সুযোগ পেয়ে যাবেন। সেই পরীক্ষার ফর্ম ভরা এখনও শুরু হয়নি।
অভিভাবকেরা বলছেন, সুপ্রিম কোর্ট মেডিক্যাল জয়েন্ট নিয়ে বিভিন্ন সময়ে যে সব নির্দেশিকা দিয়েছে, সে ব্যাপারে এ রাজ্যের জয়েন্ট্র এন্ট্রান্স বোর্ড আগে থেকে সতর্ক হলে রাজ্যের ৮৫ হাজার পরীক্ষার্থীকে এমন সঙ্কটে পড়তে হতো না। পরীক্ষার্থীদের আগে থেকে সতর্ক করলে শেষ মুহূর্তে তাঁদের এমন বিপাকে পড়তে হতো না। এ দিনও রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড এবং স্বাস্থ্য দফতর সরাসরি রাজ্যের মেডিক্যাল জয়েন্ট বাতিলের কথা ঘোষণা করেনি। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের ওয়েবসাইটেও নতুন কোনও নির্দেশিকা দেওয়া হয়নি।
রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের চেয়ারম্যান সজল দাশগুপ্ত শনিবার বলেন, ‘‘আমরা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে পরীক্ষার আয়োজন করি। সুপ্রিম কোর্টের ওই নির্দেশের পরে কী করা হবে, তা স্বাস্থ্য দফতরই বলতে পারবে। ওরা বললে আমরা ১৭ মে-র মেডিক্যাল জয়েন্ট বাতিল করতে পারি, না-বললে নয়।’’ রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেডিক্যাল জয়েন্ট পরীক্ষাথীদের আমরা কোনও আশার বাণী শোনাতে পারছি না। আমরা দিল্লিতে চিঠি লিখেছি। সোমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কাছ থেকে সেই চিঠির জবাব আসবে বলে আমরা আশা করছি। তখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারব।’’
একেবারে শেষ মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা বাতিল করার নির্দেশ দেওয়ায় রবিবার এ রাজ্য থেকে যাঁরা কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় বসছেন, অভিযোগ উঠেছে— তাঁরা তৈরি হওয়ার সুযোগ পাননি। কেন্দ্রীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা এবং এ রাজ্যের মেডিক্যাল জয়েন্টের প্রশ্নপত্র যেমন আলাদা, তেমনই উত্তর লেখার ধরনও আলাদা। তাই দুটি পরীক্ষার জন্য দুই ধরনের অনুশীলন প্রয়োজন। ১৭ মে-র পরীক্ষার জন্য যাঁরা তৈরি হচ্ছিলেন তাঁদের অনেকেই রবিবারের প্রবেশিকার জন্য তেমন জোর দেননি। সমস্যায় পড়েছেন ওই সব পরীক্ষার্থী।
যে সব রাজ্য সরকার নিজেদের মতো করে মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়ে থাকে, তাদের কয়েকটির পক্ষ থেকে শনিবার বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের বৃহস্পতিবারের নির্দেশের কিছু সংশোধনও চাওয়া হয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুরের নেতৃত্বাধীন বিশেষ বেঞ্চ তা শুনতে চায়নি। এই বিশেষ বেঞ্চ এ দিন দিল্লির দূষণ সংক্রান্ত একটি মামলা শুনছিল। ওই বিশেষ বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং আর ভানুমতী মন্তব্য করেন, ‘‘যে বেঞ্চ এই মামলা শুনছিল সেখানেই আর্জি জানাবেন। এখন রবিবারের পরীক্ষাটা ভাল ভাবে হতে দিন।’’
যে সব রাজ্যের নিজস্ব জয়েন্ট্র এন্ট্রান্স পরীক্ষা রয়েছে, তাদের এ বছরের মতো আগের নিয়মেই পরীক্ষা নিতে দেওয়ার জন্য শুক্রবার আর্জি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সে আবেদনে সাড়া দেয়নি। তাদের যুক্তি ছিল, গত ১১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের পূর্বতন প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরের পুরনো নির্দেশ খারিজ করে দিয়ে যে রায় দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কিংবা সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি তাতে ঠিকমতো গুরুত্ব দেয়নি।