কংগ্রেসের এই অসন্তুষ্ট নেতার প্রতীকীভাবে দলের থেকে দূরত্ব বাড়ানোর চেষ্টা নতুন নয়। এর আগে ট্যুইটারে তাঁর পরিচয়ে লেখা ছিল -‘প্রাক্তন সাংসদ, গুণা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী’। এক্ষেত্রে পূর্বতন ইউপিএ সরকারের আমলে যে মন্ত্রকগুলির দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তার উল্লেখ ছিল। সম্প্রতি টুইটারে নিজের পরিচয় থেকে এই সব কিছুই সরিয়ে দিয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য।
রাজ্যে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের পরিপ্রেক্ষিতে জ্যোতিরাদিত্যর এই পদক্ষেপকে খুবই তাত্পর্য্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। জানা গেছে, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ ও দিগ্বিজয় সিংহ গোষ্ঠীর কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তিনি।
গত কয়েকমাস ধরেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদের দৌড়ে সামনের সারিতে ছিলেন জ্যোতিরাদিত্য। কিন্তু সহমতের অভাবের কারণে ওই পদ ওই পদ পাননি বলে খবর।
গত লোকসভা নির্বাচনে মধ্যপ্রদেশে দলের ভরাডুবির পর নেতা হিসেবে তাঁর মর্যাদাও ক্ষুন্ন হয়েছে। এরপর বিভিন্ন ঘটনাক্রমে দলের সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গাঁধী। রাহুলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জ্যোতিরাদিত্য দলে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়েন।
কমলনাথের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক এতটাই তিক্ত হয়ে পড়ে যে, গুণার প্রাক্তন সাংসদ মধ্যপ্রদেশ সরকারের নানা কাজের সমালোচনা প্রকাশ্যেই শুরু করেন। ভোটের আগে মধ্যপ্রদেশে কৃষিঋণ মকুবের যে প্রতিশ্রুতি কংগ্রেস দিয়েছিল, তা পালনের খামতি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জ্যোতিরাদিত্য।
জ্যোতারাদিত্যর ক্ষোভ প্রশমিত করতে দল বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাঁকে মহারাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা হিসেবে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু সিন্ধিয়া পরিবারের সন্তান গোয়ালিয়র ও চম্বল এলাকাতেই কাজে মনোনিবেশ করেন।
রাজনৈতিক মহলের ধারনা ট্যুইটার-বায়োতে বদল এনে দলকে সুক্ষ্ণভাবে তাঁর অসন্তোষ ও হতাশার কথা জানিয়েছেন জ্যোতিরাদিত্য।
বিষয়টি সম্পর্কে কংগ্রেস মুখপাত্র ভুপেন্দ্র গুপ্তা বলেছেন, জ্যোতিরাদিত্য কংগ্রেসের অন্যতম শীর্ষ ও শ্রদ্ধেয় নেতা। এ ধরনের ছোটখাটো বিষয়কে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখা উচিত নয়।
বিজেপি কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের অন্তর্দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গ তুলে খোঁচা দিয়েছে। কৈলাশ বিজয়বর্গীয় বলেছেন, দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেসে উপেক্ষিত হচ্ছেন জ্যোতিরাদিত্য। তবে তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন কিনা, এ সংক্রান্ত কোনও ধারণা তাঁর নেই।
জ্যোতিরাদিত্য অবশ্য যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে বলেছেন, একমাসের আগের ট্যুইটার প্রোফাইলে বদল নিয়ে এত জল্পনা খুবই হাস্যকর।