তিরুঅনন্তপুরম: ভালবাসার কোনও বয়স হয় না! যার জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে রইলেন ৬৭ বছরের কোচানিয়ান মেনন এবং ৬৫ বছরের লক্ষ্মী আম্মল। বৃদ্ধাশ্রমে যাঁদের প্রেম শুরু। সাত পাকে বাঁধাও পড়লেন কেরলের দুই প্রৌঢ়!


ত্রিচুর জেলার রামবর্মপুরমের এক সরকারি বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিক কোচানিয়ান ও লক্ষ্মী। গত শনিবার সকাল এগারোটায় ওই বৃদ্ধাশ্রমেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন তাঁরা। কন্যা সম্প্রদান করলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী ভিএস সুনীল কুমার।

প্রথমে ঠিক ছিল, ৩০ ডিসেম্বর বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। পরে তা এগিয়ে আনা হয়। বিয়েতে লক্ষ্মী পরেছিলেন লাল রংয়ের সিল্কের শাড়ি এবং অল্প কিছু গয়না। নববধূর চুলে ছিল জুঁই ফুলের মালা। কোচানিয়ানের পরনে ছিল কেরলের ঐতিহ্যবাহী ঘিয়া রংয়ের মান্ডু ও শার্ট।

বৃদ্ধাশ্রমের সুপারিন্টেন্ডেন্ট জয়কুমার জানিয়েছেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথা মেনে মেহেন্দি অনুষ্ঠানও হয়েছিল। তিনি বলেছেন, ‘বিয়ের জন্য সুসজ্জিত মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছিল। শনিবার সকাল ১১টায় বিবাহ সম্পন্ন হয়।’ সন্ধ্যায় ছিল প্রীতিভোজের আয়োজন।

মন্ত্রী সুনীল কুমার পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘আমার জীবনের অন্যতম সুখের মুহূর্ত। কোচানিয়ান ও লক্ষ্মীর বিবাহ আজীবন মনে রাখব। বৃদ্ধাশ্রমের পরিচালক গোষ্ঠী, সমাজকর্মী, অন্যান্য বাসিন্দা ও শুভাকাঙ্খীরা মিলে অনুষ্ঠানটি চিরস্মরণীয় করে তুলেছিলেন। সরকারি বৃদ্ধাশ্রমে এরকম অনুষ্ঠান এই প্রথম। বিয়ের মণ্ডপে ৬৭ বছরের বর ও ৬৫ বছরের কনেকে ভীষণ খুশি দেখাচ্ছিল।’

নবদম্পতির ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৩০ বছরের আলাপ দুজনের। তবে মাঝে কয়েক বছর সেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। লক্ষ্মীর স্বামীর সহযোগী ছিলেন কোচানিয়ান। ২১ বছর আগে লক্ষ্মীর স্বামী মারা যান। স্বামীর মৃত্যুর পর আত্মীয়দের কাছে থাকতেন লক্ষ্মী। বছর দুয়েক আগে এই বৃদ্ধাশ্রমে চলে আসেন। মাত্র ২ মাস আগে বৃদ্ধাশ্রমে আসেন কোচানিয়ান।

বিয়ের পর নববধূ বলেছেন, ‘আমাদের দুজনেরই বয়স হয়েছে। জানি না কতদিন একসঙ্গে থাকতে পারব। তবে আমরা খুব খুশি। সব সময় অনুভব করি আমার পাশে কেউ রয়েছে।’

কোচানিয়ান-লক্ষ্মীর বিয়ের ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। এমন প্রেম দেখে সকলেই মুগ্ধ। দুজনের দীর্ঘ বিবাহিত জীবন কামনা করে একের পর এক বার্তায় ভাসছে সোশ্যাল মিডিয়া।