তিরুঅনন্তপুরম:  সারা দেশজুড়ে এখন নীতি-পুলিশগিরির হাওয়া চলছে। সম্প্রতি সেই নীতি-পুলিশগিরির জেরে তিরুঅনন্তপুরমের এক স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণীর দুই পড়ুয়াকে একে অপরকে শুধুমাত্র জড়িয়ে ধরার অপরাধে সাসপেন্ড করল স্কুল কর্তৃপক্ষ। সাসপেন্ড হওয়া ছাত্র জানিয়েছে, তার ক্লাসের সহপাঠিনীকে সে শুধু জড়িয়ে ধরে শুভেচ্ছা জানিয়েছিল।সম্প্রতি স্কুলে আয়োজতি হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানেই খুব সুন্দর গান গেয়েছিল ওই সহপাঠিনী। তাই তাকে শুভেচ্ছা জানায় অপর পড়ুয়া। এই অপরাধে সাসপেন্ড করা হয় দুজনকে। তবে এই পুরো ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক কেরল হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত। তারা স্কুলের নির্দেশেই সিলমোহর দিয়ে, কেরল রাজ্য কমিশনের শিশু অধিকার রক্ষার আবেদনকে খারিজ করে দেয়। তাদের দাবি ছিল, অবিলম্বে কেরলের সেন্ট থমাস সেন্ট্রাল স্কুল এই নির্দেশ প্রত্যাহার করুক। আদালত জানিয়েছে, রাজ্য কমিশন এবিষয় কোনওরকম নাক গলাতেই পারে না। তারা শুধুমাত্র কোনও শিশু আক্রান্ত হলে, তার সঠিক বিচারের জন্যে সরকারকে প্রস্তাব দিতে পারে। আদালতের রায়, স্কুল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্কুলের মধ্যে শৃঙ্খলারক্ষার উদ্দেশ্যে। স্কুল কতৃপক্ষের দাবি, ওই ছেলে এবং মেয়েটি সকলের সামনে একে অপরকে জড়িয়ে ধরেছিল। যদিও এরজন্যে তারা ভাইস প্রিন্সিপ্যালের কাছে ক্ষমা চায়। তবে পরে ওই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। তারপরই দুই পড়ুয়াকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেয় স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রসঙ্গত, এধরনের বিষয় যদি অকারণে প্রচার পায়, তাহলে, সেটা স্কুলের পক্ষেও বদনাম হবে বলে মন্তব্য করে কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি। এই বিষয় স্কুলের এধরনের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে একাধিক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। কেন সাধারণ একটা জড়িয়ে ধরার মতো বিষয় নিয়ে অকারণ বিতর্ক হচ্ছে। কেন অন্যের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে উঁকিঝুকি দেবে স্কুল কর্তৃপক্ষ, সেটা কতটা গ্রহণযোগ্য? প্রসঙ্গত, সাধারণ জড়িয়ে ধরা নিয়ে যদি এত বিতর্ক হয়, তাহলে, অনুমতি, যৌনতা, গুড টাপ-ব্যাড টাচ নিয়ে নতুন প্রজন্মকে কী শিক্ষা দেবে এই সমাজ?