শ্রীনগর: জম্মু কাশ্মীরে লস্কর-ই-তৈবার সন্ত্রাস নেটওয়ার্কে সামিল রাজ্যের বাইরের লোক! দক্ষিণ কাশ্মীরে সন্ত্রাসমূলক অপরাধ সহ নানা ধরনের চাঞ্চল্যকর দুষ্কর্মে জড়িত লস্করের একটি মডিউলের হদিশ পেল রাজ্য পুলিশ, যার দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের একজন স্থানীয় ছেলে নয়, উত্তরপ্রদেশের। দক্ষিণ কাশ্মীরে ছয় পুলিশকর্মী হত্যায় জড়িত ছিল মডিউলটি।


জম্মু কাশ্মীর পুলিশের আইজিপি মুনীর খান জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরের বাসিন্দা সন্দীপ কুমার শর্মা ওরফে আদিল ও দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামের বাসিন্দা মুনিব শাহ, মডিউলের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্দীপকে প্রায়ই কাজে লাগাত লস্কর।

পুলিশকর্তাটির বক্তব্য, অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদের ভেদরেখা যে ক্রমশ মুছে যাচ্ছে, সন্দীপের গ্রেফতারির পর সেটাই সামনে এল। কাশ্মীরে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক, এটিএমে লুঠের ঘটনার তদন্তেও রাজ্যে সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে নতুন কিছু বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে। তিনি বলেন, লস্কর কীভাবে সন্ত্রাসে ক্রিমিনালদের ব্যবহার করছে, কীভাবে ওরা ব্যাঙ্ক, এটিএমের টাকা ছিনতাই করে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির, নিজেদের তহবিলেও ঢালছে, সেটা তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।

আইজিপি বলেন, ১ জুলাই লস্কর কমান্ডার বসির কুখ্যাত লস্করি এনকাউন্টারে খতম হয়, তখনই ধরা পড়ে সন্দীপ। লস্করির আশ্রয় নেওয়া বাড়িতে এমন একজনকে পেয়ে আমরা বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাই। আরও গভীরে তদন্ত হয়। জানা যায়, সন্দীপ ২০১২ সালে উপত্যকায় এসেছিল, গরমের সময় ওয়েল্ডার হিসাবে কাজ করত। আবার শীতের সময় উপত্যকা ছেড়ে চলে যেত, বিশেষত পাতিয়ালায়। পঞ্জাবে কাজ করার সময় তার সঙ্গে আলাপ হয় সেখানে কর্মসূত্রে যাওয়া কুলগামের বাসিন্দা জনৈক শাহিদ আহমেদের সঙ্গে। চলতি বছরের জানুয়ারি সন্দীপ উপত্যকায় ফেরে, দক্ষিণ কাশ্মীরে ব্যাঙ্ক, এটিএম লুঠ ও ডাকাতির ছক কষে। সন্দীপ, মুনিব শাহ, শাহিদ আহমেদ ও মুজফফর আহমেদ, এই ৪ জন কুলগামে একটি ভাড়াবাড়িতে থাকত অপরাধমূলক কাজকারবার করবে বলে। সেখানেও ওদের সঙ্গে দেখা হয় শকুর আহমেদ নামে কট্টর লস্কর জঙ্গির সঙ্গে। সেই শুরু। সন্দীপকে এটিএম লুঠ-ছিনতাইয়ে ব্যবহার করে জঙ্গিরা। লুঠের অর্থ ভাগ-বাঁটোয়ারা হয়ে যেত।




সন্দীপ অপরাধ ও সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মে যুক্ত ছিলই, লস্কর জঙ্গিদের বিভিন্ন অপরাধে সামিল হয়ে সে-ও পাকা সন্ত্রাসবাদীতে পরিণত হয়। ১৬ জুন আছাবলে এসএইচও ফিরোজ দার ও আরও ৫ জনকে খুন করে মুখগুলি বিকৃত করে দেওয়া, গত ৩ জুন লোয়ার মুন্ডায় সেনা কনভয়ে হামলা করে জওয়ান হত্যা, অনন্তনাগে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির রক্ষীর অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার ঘটনায়ও ছিল সে।
সন্দীপের মতোই আরও বহিরাগতদের কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদে জড়িত থাকার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আইজিপি বলেন, এই অবস্থায় আমাদের উপত্যকায় বিভিন্ন পেশায় কর্মরত বাইরের শ্রমিকদের ব্যাপারেও খোঁজখবর করতে হবে।

এই 'নতুন ছবিটি' তাঁদের কাছে চ্যালেঞ্জ, মানছেন আইজিপি।