নয়াদিল্লি: সংঘাতের আবহে অন্ধ্র মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ বিজেপি মন্ত্রীদের, চন্দ্রবাবুকে ফোন মোদীর।


ক্ষুব্ধ চন্দ্রবাবু নাইডুকে শান্ত করতে তাঁকে ফোন করে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি) সুপ্রিমো তথা অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর রাজ্যকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি তুলে অনড়। তিনি গতকাল রাতে চরম সিদ্ধান্ত নেন। জানিয়ে দেন, দাবি মানা হয়নি, অতএব কেন্দ্রে এনডিএ সরকার থেকে বেরিয়ে আসবেন তাঁরা।
সরকারি সূত্রের খবর, আজ সন্ধ্যা ৬টায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় টিডিপি-র দুই মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে দেখা করে ইস্তফাুপত্র পেশ করেন। এঁরা হলেন অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রী অশোক গজপতি রাজু ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ওয়াই এস চৌধুরি। রাজু পরে সাংবাদিকদের জানান, তাঁরা এনডিএ ছাড়ছেন না, জোটে থাকছেন।
চৌধুরি বলেন, বিশেষ ক্যাটাগরির মর্যাদা অন্ধ্রের কাছে আবেগের ইস্যু। কিন্তু কেন্দ্র সেটা বুঝল না। কেন্দ্রের দেওয়া বিশেষ প্যাকেজ যথেষ্ট নয় বলেও জানান তিনি। তবে একইসঙ্গে বলেন, কেন্দ্র যে কিছুই করেনি, সেটা বলাও ঠিক হবে না।

এর আগে সংঘাতের আবহেই কেন্দ্রে এনডিএ সরকার ছেড়ে টিডিপি-র বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে তেলঙ্গানা বিজেপির নেতা কৃষ্ণ সাগর রাও বলেন, এটা চন্দ্রবাবু নাইডুর সুবিধাবাদী রাজনীতির উত্কৃষ্ট নমুনা বলে বিজেপি মনে করে। এটা বোঝাপড়ার রাজনীতিও। তিনি দাবি করেন টিডিপি ২০১৩-য় এনডিএ-তে ঢোকে, পরের বছর ২০১৪-র সাধারণ নির্বাচনে বিজেপির সমর্থনে মানুষের রায়ে জয়ী হয়। ২০১৮-য় আরেকটা নির্বাচনের আগে আবারও নাইডু সুবিধামতো সরে যেতে চাইছেন। এর কারণ এটাই সুনিশ্চিত করা যে, বিজেপি অন্ধ্রপ্রদেশে রাজনৈতিক ভাবে বাড়তে পারবে না, ওদের সমান হয়ে উঠবে না।

এদিন সকালে অন্ধ্রের চন্দ্রবাবু নাইডু মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিলেন দুই বিজেপি মন্ত্রী কামেনেনি শ্রীনিবাস ও পি মণিকল্য রাও। অন্ধ্রকে স্পেশাল স্ট্যাটাস না দেওয়া নিয়ে মতানৈক্যের জেরে টিডিপি গতকালই এনডিএ ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছে। তার জবাব হিসেবে আজ বিজেপি মন্ত্রীরা পদত্যাগ করলেন অন্ধ্র মন্ত্রিসভা থেকে।

আজ অমরাবতীতে মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুর অফিসে গিয়ে শ্রীনিবাস ও মণিকল্য রাও তাঁদের পদত্যাগপত্র তুলে দেন তাঁর হাতে। তবে মুখোমুখি তাঁদের মধ্যে কোনও অসন্তোষ ছিল না। বরং টিডিপি মন্ত্রীরা পদত্যাগী মন্ত্রীদের জড়িয়ে ধরে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান।

আগামী বছর অন্ধ্রে নির্বাচন, তার আগে বিরোধী ওয়াইএসআর কংগ্রেস রাজ্যের স্পেশাল স্ট্যাটাস নিয়ে যথেষ্ট চাপ তৈরি করেছে টিডিপির ওপর। সেই চাপ হালকা করে নিজেদের অন্ধ্রের একমাত্র শুভানুধ্যায়ী হিসেবে তুলে ধরে তারা এই পদক্ষেপ করল মনে করা হচ্ছে।

তবে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের প্রস্তাবগুলি দেখিয়ে কেন্দ্র বলে দেয়, তাদের পক্ষে টিডিপির দাবি মানা সম্ভব নয়। যদিও রাজ্যভাগের পর অন্ধ্রের পরিকাঠামো ও শিল্প ক্ষেত্রের উন্নতি সংক্রান্ত সবরকম সাহায্য করা হয়েছে।