মুম্বই: ফেরত নেওয়ার আগে পরিযায়ী শ্রমিকদের পরীক্ষা করে দেখার কথা যে রাজ্যসরকারগুলি বলছে, তাদের কড়া সমালোচনা করেছে শিবসেনা। এই পদক্ষেপকে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আখ্যা দিয়েছে মহারাষ্ট্রের শাসক দল। শিবসেনার মুখপাত্র সামনা-র সম্পাদকীয় নিবন্ধে এ প্রসঙ্গে বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশ সরকারের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে। সামনা-য় বলা হয়েছে, উত্তরপ্রদেশ সরকার রাজস্থানের কোটা থেকে পড়ুয়াদের কোনও পরীক্ষা ছাড়াই ফিরিয়ে আনা হয়েছে, ‘কারণ তাঁরা ধনী’। আর দরিদ্রদের কাছ থেকে ‘ট্রেনের ভাড়া নেওয়া হচ্ছে’।
ঘর ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেন ভাড়া মিটিয়ে দিতে দলের রাজ্য শাখাগুলিকে নির্দেশ দেওয়ায় শিবসেনা কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর ভূয়সী প্রশংসা করেছে। বলা হয়েছে, সনিয়ার এই নির্দেশ মানবিক কারণেই। সামনা-র সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, মহারাষ্ট্র ও গুজরাতে পরিযায়ী শ্রমিকদের অধিকাংশ উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশের।
শিবসেনা বলেছে,’গতকাল পর্যন্ত এই শ্রমিকরা ছিলেন রাজনৈতিক দল ও নেতাদের ভোট ব্যাঙ্ক, যেন মুম্বই ও মহারাষ্ট্র এই পরিযায়ী শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমে গড়ে উঠেছে। এই সংকটের তাঁরা পালিয়ে যাচ্ছেন এবং তাঁদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন’।
সামনা-র নিবন্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো নিয়ে উত্তরপ্রদেশের সরকার ডিগবাজি খেয়েছে এবং তাঁদের জন্য করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরীক্ষার মতো কঠিন শর্ত রাখা হচ্ছে। সামনা-য় বলা হয়েছে, এ ধরনের শর্ত খুবই ‘নিষ্ঠুর ও অমানবিক’। উত্তরপ্রদেশ সরকার এক্ষেত্রে ‘ধনী ও দরিদ্রদের প্রতি বৈষম্যমূলক ব্যবহার’ করছে বলেও শিবসেনা অভিযোগ করেছে।
মরাঠি ওই সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ‘কোনও পরীক্ষা ছাড়াই পড়ুয়াদের ফিরিয়ে আনতে কয়েকশ বাস পাঠানো হয়েছিল। কারণ, তারা ধনী। দরিদ্রদের জন্য ট্রেনের ভাড়াও নেওয়া হচ্ছে’।
শিবসেনা বলেছে, মহরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। মহারাষ্ট্র সরকার তাদের ভালোভাবে দেখভাল করেছে। কিন্তু এখন তাঁরা নিজেদের রাজ্যে ফিরতে চাইছেন। কিন্তু তাঁদের রাজ্য তাঁদের ফেরাতে নারাজ।
সামনা-য় বলা হয়েছে, ‘পরিযায়ী শ্রমিকরা কুকুর-বেড়াল নন। কিন্তু তাঁদের রাজ্যগুলি মানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে না’। শিবসেনা বলেছে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ি সঙ্গত কারণেই বলেছেন, ‘পরিযায়ী শ্রমিকরা মহারাষ্ট্র থেকে চলে যেতে পারেন। কিন্তু নিজেদের রাজ্যে ফিরে খাবেন কী’।