লখনউ: জীবনের সেরা ভ্যালেন্টাইন দিবস পালন করলেন অ্যাসিড-হামলায় আক্রান্ত প্রমোদিনী। এদিন, দীর্ঘ সময়ের বন্ধু সরোজ সাহুর সঙ্গে বাগদান সারলেন ২৫ বছরের এই তরুণী। প্রমোদিনীর এই লড়াইয়ে সর্বদা তাঁর পাশে ছিলেন সরোজ। এদিন সারা জীবন একে অপরের পাশে থাকার অঙ্গীকার করলেন দুজনে।
২০০৯ সালে ওড়িশার জগতপুরে প্রমোদিনীর ওপর অ্যাসিড-হামলা হয়। অভিযোগ, প্রেমে প্রত্যাখ্যান হওয়ার পর তাঁর ওপর হামলা চালায় এক যুবক। ৮০ শতাংশ জ্বলনের সঙ্গে সঙ্গে দৃষ্টিশক্তিও হারান তিনি।
প্রমোদিনীর জীবনে আক্ষরিক অর্থেই কার্যত আঁধার নেমে আসে। শারীরিক ও মানসিক আঘাত সামলে ওঠার কাজ সহজ ছিল না। তবে, এই সময় তিনি পাশে পান সরোজকে। এই যুবকের সহযোগিতায় মানসিক ধাক্কা সামলে ওঠেন প্রমোদিনী। পাশাপাশি, চিকিৎসায় ২০ শতাংশ দৃষ্টি ফিরে আসে।
তরুণী জানান, পরীক্ষা দিয়ে তিনি কলেজ থেকে ফিরছিলেন, যখন হামলা হয়। টাকা না থাকায় ন’মাস সরকারি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকতে হয়েছিল। পাঁচ বছর শয্যাসায়ী থাকার পর ২০১৪ সালে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
সেখানেই পেশায় মেডিক্যাল রিপ্রেসেনটেটিভ সরোজের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। প্রমোদিনীকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর দায়িত্ব নেন সরোজ। চিকিৎসকরা বলেছিলেন দশ মাস লাগবে। কিন্তু, সরোজের নিরন্তর প্রচেষ্টায় মাত্র চারমাসেই এই কাজ করে দেখান তিনি।
এরপর ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, ভ্যালেন্টাইন দিবসে প্রমোদিনীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন সরোজ। সিদ্ধান্ত নেওয়া তরুণীর পক্ষে সহজ ছিল না। কারণ, তাঁর আশঙ্কা ছিল, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু, নাছোড় ছিলেন সরোজ। অবশেষে ২ বছর পর আরেক ভ্যালেন্টাইন দিবসে বাগদান সারলেন প্রমোদিনী-সরোজ।