ভদোদরা: বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় প্রাচীন ভারতে মুনি ঋষিদের অবদানের কথা উল্লেখ করা হল গুজরাতের মহারাজা সায়াজিরাও বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭ সালের ডায়েরিতে।

বলা হয়েছে, ‘পারমাণবিক প্রযুক্তি গড়ে তোলা’ থেকে শুরু করে ‘রকেট ও বিমান আবিষ্কার’, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান ছিল তাঁদের। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ডায়েরির জানুয়ারি পাতায় শুশ্রুতকে ‘কসমেটিক সার্জারির জনক’  হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আচার্য কনাদ পারমাণবিক প্রযুক্তি গড়ে তুলেছিলেন বলে দাবি করা হয়েছে। মহাবিশ্ববিদ্যা (কসমোলজি)-র জনক আখ্যা দেওয়া হয়েছে কপিল মুনিকে।ডায়েরিতে মহর্ষি ভরদ্বাজকে রকেট ও বিমানের আবিষ্কর্তা, চরক ঋষিকে ওষুধের জনক এবং গর্গ মুনিকে নক্ষত্র বিজ্ঞানী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।

ডায়েরিতে জগদীশ চন্দ্র বসু, বিক্রম সারাভাই, সিভি রমন, শ্রীনিবাস রামানুজন ও আর্যভট্টর মতো বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও গনিতজ্ঞদের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরএসএসের তাত্ত্বিক নেতা তথা শিক্ষা বাঁচাও আন্দোলন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা দিননাথ বাত্রার বই থেকে এই প্রসঙ্গগুলি নেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেছেন, দিননাথ বাত্রার বইয়ে বৃহদবিমানশাস্ত্র, লোহাদিকরম গ্রন্থের প্রণেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রামায়ণে বর্নিত পুষ্পক বিমানের মতো ওই গ্রন্থে ধাতু ও ধাতুশঙ্করকে উড়ন্ত বস্তু বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। একইভাবে পারমাণবিক তত্ত্ব গড়ে তোলার জন্য কনাদকে কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে।বৈশেষিক দর্শণ গ্রন্থে কনাদ বিষয়টি আলোচনা করেছিলেন।

এগুলিকে ভারতের সম্বৃদ্ধ ইতিহাসের উদাহরণ হিসেবে ডায়েরিতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়েরি কমিটির প্রধান পারফর্মিং আর্টস বিভাগের ডিন অজয় আশতাপুত্রে। তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য জিগেশ সোনির সুপারিশে ডায়েরিতে ওই নামগুলি রাখা হয়েছে। জিগেশ সোনির বাব গুজরাতে জন সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আশতাপুত্রে বলেছেন, সিন্ডিকেটের প্রবীণ সদস্যের সুপারিশ মানতে হয় ডায়েরি কমিটিকে।

জিগেশ সোনির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঋষি বিজ্ঞানী ছিলেন। তাঁরা তাঁদের গবেষণার জন্য প্রসিদ্ধ এবং স্ব-স্ব ক্ষেত্রে তাঁদের বিজ্ঞানী হিসেবে মনে করা হয়। তিনি আরও বলেছেন, অনেকেই এ কথা বিশ্বাস নাও করতে পারেন। কিন্ত অনেকে তো বিশ্বাসও করেন। এই সব নাম নিয়ে বিতর্ক কিসের, সেই প্রশ্নও তুলেছেন সোনি। তাঁদের নাম মূলধারার শিক্ষাক্রমেও সামিল হওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ডায়েরির ২০০০ কপি ছাপা হয়েছে এবং সেগুলি বিলি হয়েছে।