নয়াদিল্লি: সদ্য প্রকাশিত বই ‘দ্য কোয়ালিশন ইয়ারস’-এ পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বরাবরের বিদ্রোহী নেত্রী বলে উল্লেখ করেছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। তিনি আরও লিখেছেন, মমতার মধ্যে এমন একটা তেজ আছে, যা ব্যাখ্যা করা কঠিন কিন্তু উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। নির্ভীকভাবে নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ার গড়েছেন মমতা। তিনি আজ যে জায়গায় পৌঁছেছেন, সেটা তাঁর নিজের লড়াইয়ের ফল।


মমতার বিদ্রোহ প্রসঙ্গে ১৯৯২ সালে প্রদেশ কংগ্রেসের সাংগঠনিক নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেছেন প্রণব। তিনি লিখেছেন, ‘সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, মমতা সহ প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষনেতৃত্ব সাংগঠনিক নির্বাচনে ভোটাভুটির বদলে সর্বসম্মতি চাইছেন। তাঁদের আশঙ্কা, প্রকাশ্যে নির্বাচন হলে দলাদলি প্রকট হয়ে যাবে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তথা কংগ্রেস সভাপতি আমাকে মধ্যস্থতা করার দায়িত্ব দেন। একদিন আমি সাংগঠনিক নির্বাচন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতামত জানার জন্য তাঁকে বৈঠকে বসার আহ্বান জানাই। আলোচনা চলাকালীন মমতা হঠাৎ রেগে গিয়ে বলেন, আমরা তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছি। তিনি বলে বসেন, ভোটাভুটির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই তৃণমূল স্তরের কর্মীরা সংগঠনের বিষয়ে তাঁদের মতামত জানাতে পারবেন। আমাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদ বিলি করারও অভিযোগ করেন মমতা। তিনি কোনও কথা না শুনেই রেগে গিয়ে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। সেই নির্বাচনে মমতাকে সামান্য ব্যবধানে হারিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হন সোমেন মিত্র। ফল ঘোষণার পর মমতা এসে আমাকে বলেন, আপনি খুশি হয়েছেন? আমাকে হারানোর ইচ্ছা পূরণ হয়েছে? আমি বলেছিলাম, তিনি ভুল করছেন।’

১৯৮৪ সালে সিপিআইএম-এর হেভিওয়েট পার্থী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মমতার জয়কে চমকপ্রদ বলে উল্লেখ করেছেন প্রণব। তাঁর মতে, রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই একের পর এক কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেছেন মমতা। তিনি কোনওদিন ভয় পাননি। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে রাজনীতি করে সফল হয়েছেন মমতা।