আগরতলা: বাংলার পর এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্য ত্রিপুরা। সিপিএমের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার এখানেও পরিবর্তনের ডাক দিলেন তৃণমূলনেত্রী। একযোগে বিঁধলেন বাম-কংগ্রেস-বিজেপিকে।
কলকাতা থেকে মাত্র ৪৯০ কিলোমিটার দূরে পড়শি রাজ্যেই এবার ঘাসফুল ফোটানোর স্বপ্ন দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইসঙ্গে তাঁর স্বপ্ন, ফের একটা বাম দুর্গে ধস নামানো। তাঁর ঘোষণা, বামেরা কিচ্ছু করেনি ত্রিপুরায়। এখানে মা মাটি মানুষের সরকার হবে।
উন্নয়নের স্লোগানে দ্বিতীয়বার পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এসেছেন। ত্রিপুরাতেও যে সেই একই মডেলে প্রথমবার ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করবেন, তা মঙ্গলবার আগরতলার আস্তাবল ময়দানের মাঠের জনসভা থেকেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, আমরা এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, হাসপাতাল করেছি, ত্রিপুরায় সিপিএম কী করেছে?
সিপিএমের অবশ্য দাবি, মমতার হুঙ্কার কিংবা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি-- কোনওকিছুতেই কাজ হবে না! যদিও, সোমবার যেভাবে আগরতলায় গিয়ে সূর্যকান্ত মিশ্র তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়েছেন, তা থেকে কিন্তু অনেকেই সিপিএমের কপালে চিন্তার ছাপ দেখছেন!
১৯৯৩ সাল থেকে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। তার আগে এখানে কংগ্রেসের সরকার ছিল। সম্প্রতি কংগ্রেসের ১০জন বিধায়কের মধ্যে ৬জন কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। এদিন সেই প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেসের গায়ে ফের একবার সিপিএমের বি-টিমের তকমা লাগানোর চেষ্টা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, কংগ্রেসকে নিয়ে অত্যাচার করে সিপিএম। কংগ্রেস সিপিএমের বি-টিম। পাশাপাশি, এদিনের সভা থেকে বিজেপিকেও আক্রমণ করেন মমতা। বলেন, বিজেপি কোনও কাজ করতে পারেনা।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানেন কংগ্রেসের বিধায়কদের মতোই কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কেও ধস নামাতে পারলে, ত্রিপুরায় নিজেদের মাটি শক্ত করা সম্ভব। সেইসঙ্গে বিজেপিও তাঁর নিশানায়, কারণ, ২০১৫-১৬র উপনির্বাচনে কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে ত্রিপুরায় দ্বিতীয় শক্তি হিসাবে উঠে এসেছে বিজেপি। আরএসএস-ও জমি তৈরিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ত্রিপুরায় সিপিএমকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হলে কংগ্রেস ও বিজেপিকে রাস্তা থেকে সরানোটা যে অত্যন্ত জরুরি, তা ভাল করেই জানেন মমতা। তাই তাঁর নিশানায় এই দুই দলও।এমনটাই মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের।