নয়াদিল্লি: এনডিএ সরকার দেশকে সামনে নয়, পিছনে নিয়ে চলেছে। ৫০০ ও ১,০০০ টাকার নোট বাতিলের জেরে তৈরি ‘নজিরবিহীন’ পরিস্থিতিই তার প্রমাণ। বৃহস্পতিবার দিল্লির আজাদপুর মান্ডিতে নোট বাতিলের প্রতিবাদে জনসভায় অভিযোগ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আম আদমি পার্টি প্রধান, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের সঙ্গে এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে শাসক জোটকে তুলোধোনা করলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, নোট বাতিলের জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতি ভারতের ইতিহাসে ‘নজিরবিহীন’। কেন্দ্রের এই ‘খামখেয়ালি’ সিদ্ধান্তের জেরে প্রবল দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। এ রকম ‘বিপর্যয়’ দেশ আগে দেখেনি। তাঁর দাবি, ৩দিনের মধ্যে কেন্দ্রকে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে। না হলে দেশজোড়া আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।
দিল্লির মঞ্চ থেকে এদিন নরেন্দ্র মোদীকে সরাসরি আক্রমণ করে মমতার প্রশ্ন, ‘সবাই চোর আর শুধু তুমিই সাধু’? তাঁর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী দেশের থেকে বিদেশে থাকেন বেশি। দেশের নয়, তিনি শুধু ভাবেন বিদেশের কথা। ‘আচ্ছে দিন’-এর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন। অথচ কোথায় সেই ‘আচ্ছে দিন’, মানুষ তো কাঁদছেন।
তাঁর কথায়, নোট বাতিলের জেরে খেতে পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। নোটের অভাবে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সীমান্তে দাঁড়ানো ট্রাক ট্রাক সবজি পচে যাচ্ছে। উপস্থিত দর্শককে তাঁর প্রশ্ন, সবজি মান্ডি বন্ধ হয়ে গেলে মানুষ খাবে কি? ব্যাঙ্ক না এটিএম? দেশের ৪ শতাংশ মাত্র মানুষ প্লাস্টিক মানি ব্যবহার করেন, বাকি ৯৬ শতাংশের কী হবে?
মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট কথা, দেশে স্বৈরতন্ত্র চলবে না। এখন যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, জরুরি অবস্থাতেও তা দেখা যায়নি। তা ছাড়া এক একদিন এক এক রকম নিয়ম করছে সরকার। এতদিন বলছিল, সপ্তাহে ৪,৫০০ টাকা ঊর্ধ্বসীমা পর্যন্ত নোট বদলানো যাবে, এখন সেটা কমিয়ে এনে করেছে ২,০০০। এতে মানুষের সমস্যা আরও বাড়ছে।
মমতার বক্তব্য, এটা ইগোর লড়াই নয়, রুটি রুজির লড়াই, মানুষের লড়াই। দেশকে বাঁচানোর লড়াই। আর তাঁকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে লাভ নেই। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘হাম ডরতে নেহি, হাম লড়তে হ্যায়’।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের কথাতেও শোনা গেছে মমতার প্রতিধ্বনি। তাঁর দাবি, সাধারণ মানুষ তাঁকে বলেছেন, নতুন নোটে কোনও লাভ হবে না, বরং ২,০০০ টাকার নোটে কালোবাজারি ও দুর্নীতি আরও বাড়বে। নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘দেশের বৃহত্তম দুর্নীতি’ বলেও অভিহিত করেছেন তিনি।