ঝাঁসি: স্মার্টফোনের পাসওয়ার্ড না দেওয়ায় ভাড়াটে খুনি দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করল স্বামী। এমনই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে। স্মার্টফোনের প্যাটার্ন লক স্বামীর মনে এমনই সন্দেহ তৈরি করল, যার ফলে সে স্ত্রীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষল। এজন্য কানপুর থেকে দুষ্কৃতীদের ভাড়া করে নিয়ে এসে বাড়িতে লুঠপাঠের নাটক সাজিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করে সে।
কিন্তু ঝাঁসির কোতওয়ালি থানার পুলিশ শেষপর্যন্ত রহস্যভেদে সক্ষম হয়। এই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মহিলার নাম পুনম বর্মা। কোতওয়ালি থানার ফিল্টার রোডে শান্তিভবনের বাসিন্দা পুনমকে গত ২৯ আগস্ট রাতে গলা টিপে হত্যা করা হয়। এই খুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। মহিলার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এই ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ।
তদন্তে নেমে মহিলার স্বামীকে জেরা করে পুলিশ। প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে জেরায় ভেঙে পড়ে স্বামী। ঝাঁসির এসপি দীনেশ কুমার সিংহ জানিয়েছেন, প্রথম থেকেই পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে। পদস্থ আধিকারিকদের নেতৃত্বে তদন্তকারী দল গঠন করা হয়।
জেরায় পুনমের স্বামী বিনীত কুমার জানিয়েছে, ২০০৮-এ তারা বুন্দেলখণ্ডে হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোর্স করতে আসে। সেখানেই পুনমের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। পরে পরিবারের মতের বিরুদ্ধে গিয়ে তারা বিয়ে করে এবং ঝাঁসিতে বসবাস করতে শুরু করে। প্রথমে ঝাঁসিতে বিদ্যুতের মিটার বসানোর কাজ করত বিনীত। পরে কানপুরে গিয়ে সোলার লাইট লাগানোর কাজ শুরু করে। কাজের জন্য বিনীত ৭ বা ১৫ দিন ছাড়া বাড়িতে ফিরত। এরইমধ্যে তাদের এক সন্তানের জন্ম হয়। বিনীতের অভিযোগ, পুনম তাকে ভালোবাসত না এবং তার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছিল। এসবের মধ্যে বিনীত একটি স্মার্টফোন কিনে স্ত্রীকে উপহার দেয়। কিন্তু সেই ফোন লক করে রাখতেন পুনম।
কানপুর থেকে বাড়িতে স্ত্রী ও সন্তানের কাছে বিনীত যখন আসত তখন পুনম ফোনটি লুকিয়ে রাখতেন। বেশ কয়েকবার বিনীত পুনমের কাছে ফোনের লক খোলার পাসওয়ার্ড জানতে চায়। কিন্তু পুনম তা দিতে অস্বীকার করত। যা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত।
এরইমধ্যে বিনীতের মনে গভীর সন্দেহ দানা বাঁধে। বিনীতের অভিযোগ, মেয়েকে দেখাশোনাও ঠিকমতো করতেন না পুনম। এরপরই সে স্ত্রীকে হত্যার ছক কষে।