নয়াদিল্লি: বাবাকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। হত্যার পর এক প্রতিবেশীকেও আহত করে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ১১ জন পুলিশকর্মীকে জখম করে অভিযুক্ত। ঘটনাস্থল দিল্লি।


খবরে প্রকাশ, অবসরপ্রাপ্ত আর্থিক সেক্টর কর্মী রাজিন্দর মট্টা কয়েকদিন আগেই ফেরেন কানাডা থেকে। রবিবার, দুপুরে পূর্ব দিল্লির মধূবিহারের একটি আবাসনে নিজের ফ্ল্যাটে ছেলের হাতে আক্রান্ত হন তিনি।


পুলিশ জানিয়েছে, সওয়া ২টো নাগাদ অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছয় বছর সাঁইত্রিশের রাহুল। আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীদের সে গেট খুলতে বললে, রক্ষীরা অস্বীকার করেন। সেখানে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি শুরু করে দেয় সে।



চিৎকার শুনে জড়ো হন আবাসনের কয়েকজন বাসিন্দাও। খবর দেওয়া হয় রাজিন্দরকেও। এর মধ্যেই নিরাপত্তারক্ষীদের মেরে জোর করে বাবার ফ্ল্যাটে ঢুকে ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁর গলা চিরে দেয় রাহুল। এরপর বেশ কয়েকবার কুপিয়ে বাবাকে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজিন্দরের।


ফ্ল্যাটের মধ্যে রাজিন্দরের চিৎকার শুনে ফ্ল্যাটে ঢোকেন এক মহিলা প্রতিবেশী। রাহুল তাঁকেও আক্রমণ করে। এরপর রাহুল আরেক প্রতিবেশির ফ্ল্যাটে ঢুকে দরজা ভেতর থেকে  বন্ধ করে দেয়।


খবর দেওয়া হয় পুলিশে। এরমধ্যে রাহুল ওই প্রতিবেশির ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে ঢুকে গ্যাসের খুলে দেয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকতেই, রাহুল আগুন লাগিয়ে দেয়।


বিকট বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা আবাসন। ১১ জন পুলিশকর্মী আহত হন। এর মধ্যে ৪ এসআই ৩০-৪০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন, ২ জন এএসআই ২৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন। রাহুলও আহত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।


কিন্তু, কেন বাবাকে হত্যা করল রাহুল? পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় মার্চেন্ট নেভির নাবিক রাহুল সম্প্রতি কাজ হারায়। তার বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি অভিযোগ ছিল। এছাড়া, গত বছর এক মহিলার শ্লীলতাহানির করার জন্য হাজতেও থাকতে হয়েছে রাহুলকে।


সব মিলিয়ে ছেলের ব্যবহার ও কুকর্মের জেরে বীতশ্রদ্ধ ছিলেন রাজিন্দর। যার জেরে রাহুলকে ত্যজ্যপুত্রও করেছিলেন তিনি। সম্পত্তি থেকে বেদখলও করেছিলেন। উইলে রাহুলের কোনও নাম ছিল না। বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন।


এমনকী, রাহুলের সঙ্গে এক মহিলার সম্পর্ক ছিল। রাজিন্দরের তাতেও আপত্তি ছিল। এসব নিয়ে বাবার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল ছেলে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, ওই ফ্ল্যাটে স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন রাজিন্দর। কিন্তু, ঘটনার সময় তিনি ছিলেন না।রাজিন্দরের আরেক ছেলে মার্কিন মুলুকে থাকে।