মুম্বই: বউ ঘুম থেকে দেরী করে ওঠে। ভালো রান্নাবান্নাও করতে পারে না। এই কারণে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে আর্জি খারিজ করে দিল বম্বে হাইকোর্ট। এর আগে পারিবারিক আদালতও মুম্বইয়ের সান্তাক্রজের ওই বাসিন্দার আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। পারিবারিক আদালতের সেই রায়ই বজায় রাখল বম্বে হাইকোর্ট। বিচারপতি কেকে তেতেড় ও বিচারপতি সারাং কোতওয়ালের বেঞ্চ বলেছে, স্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তির তোলা অভিযোগগুলি নিষ্ঠুরতার পর্যায়ে পড়ে না। তাই এর ভিত্তিতে বিবাহবিচ্ছেদের আর্জি মঞ্জুর করা যায় না।
আদালত বলেছে, আবেদনকারীর স্ত্রী কর্মরতা মহিলা। এরপরও গৃহস্থালির জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা এবং স্বামী ও তাঁর বাবা-মায়ের জন্য খাবার রান্না করে দেন তিনি। এছাড়া বাড়ির অন্যান্য কাজকর্মও করেন তিনি। এরপর আর পিটিশনকারীর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সুস্বাদু খাবার-দাবার রান্না করতে না পারা বা কর্তব্যপরায়ণ না হওয়ার অভিযোগ ধোপে টেকে না।
হাইকোর্টে দায়ের করা আর্জিতে ওই পিটিশকারী অভিযোগ করেছিলেন যে, পারিবারিক আদালতের রায়ে ত্রুটি ছিল। পিটিশনকারী অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে তাঁর বাবার বিবৃতি জমা দিয়েছিলেন। পিটিশনকারী আরও অভিযোগ করেন যে, সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে বললে স্ত্রী তাঁকে ও তাঁর বাবা-মাকে গালাগালি করে। তাঁর আরও অভিযোগ, সন্ধে ছয়টায় কাজের জায়গা থেকে বাড়িতে ফিরে স্ত্রী ঘুমিয়ে পড়েন। তারপর সাড়ে আটটা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে রাতের রান্নার কাজে হাত দেন।
পিটিশনকারী অভিযোগ করেছেন, তাঁর স্ত্রী যে খাবার রান্না করেন, তা মুখে দেওয়ার অযোগ্য। প্রয়োজনমনো রান্নাও করেন না তিনি। স্ত্রী তাঁ সঙ্গে সময় কাটান না বলেও অভিযোগ তাঁর। এমনকি, কাজ থেকে বাড়ি ফিরলে স্ত্রী তাঁকে এক গ্লাস জলও দেন না বলে অভিযোগ তাঁর।
যদিও এ সমস্ত অভিযোগ খারিজ করেছেন স্ত্রী। তিনি দাবি করেন, কাজে যাওয়ার আগেই তিনি পুরো পরিবারের জন্য রান্না করে যান। নিজের দাবির স্বপক্ষে প্রতিবেশী ও কয়েকজন আত্মীয়র বক্তব্য পেশ করেন আদালতে। ওই প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেছেন, তাঁরা যখনই গিয়েছেন তখনই পিটিশনকারীর স্ত্রীকে বাড়ির কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখেছেন। পাল্টা স্ত্রীর দাবি, স্বামী এবং শ্বশুর-শাশুড়িই তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
সওয়াল-জবাব শেষে আদালত পিটিশনকারীর আর্জি খারিজ করে দিয়েছে।