নয়াদিল্লি:  নির্বাচনী সংস্কারে বড়সড় পদক্ষেপ কেন্দ্রের। পার্টি ফান্ডে ২ হাজারের বেশি নগদে চাঁদা নয়। এর বেশি চাঁদা হলে দিতে হবে চেক, কিংবা অনলাইনে। যার ওপর সবসময় নজর রাখতে পারবে সরকার।


রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে ভুতুড়ে চাঁদা ঢোকা আটকাতে অবশেষে তৎপর হল কেন্দ্রীয় সরকার। বাজেট বক্তৃতায় মোদীর অর্থমন্ত্রী জানালেন,

কোনও রাজনৈতিক দল, ২ হাজার টাকার বেশি নগদে আর চাঁদা নিতে পারবে না। চলতি নিয়ম হচ্ছে,

২০ হাজার টাকার বেশি কেউ অনুদান দিলে তাঁর নাম, ঠিকানা রেখে দিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলিকে।কিন্তু, তার নিচে টাকা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নিষেধ বর্তমান আইনে নেই।

সম্প্রতি জাতীয় নির্বাচন কমিশনও সুপারিশ করে,

রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে দু’হাজার টাকা অথবা তার বেশি চাঁদা জমা পড়লেই, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব দিক সরকারের কাছে।

কমিশনের সুপারিশকে মান্যতা দিয়ে, তৃতীয় বাজেটে ঘুরিয়ে সেই সংস্থানই রেখেছে মোদী সরকার।

রাজনৈতিক দলকে, চাঁদা দেওয়ার মাধ্যম নিয়ে আরও একটি ঘোষণা করেছেন অরুণ জেটলি।

সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল।

যদিও তৃণমূলের মতো কোনও কোনও দলের আবার দীর্ঘদিনের দাবি, নির্বাচনী খরচের দায়ভার নিক রাষ্ট্র।তবেই গোটা প্রক্রিয়ায় পুরোপুরি স্বচ্ছতা আসবে।

কালো টাকা উদ্ধারের কথা বলে, মোদী নোট বাতিলের পথে হেঁটেছেন। যার জেরে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। তার পরেও কত কালো টাকা উদ্ধার হয়েছে তা এখনও জানায়নি সরকার। কিন্তু অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখা হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, ক’দিন আগে চাঞ্চল্যকর একটি তথ্য প্রকাশ করে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস। রিপোর্টে এডিআর দাবি করে,

গত ১১ বছরে জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলির তহবিলে জমা পড়া, প্রায় ১১ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা মধ্যে প্রায় ৬৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই চাঁদার উৎস অজানা!

১১ বছরে জাতীয় দলগুলির অজানা সূত্রে আয় বেড়েছে প্রায় ৩১৩ শতাংশ।

আঞ্চলিক দলগুলির ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির পরিমাণ আবার প্রায় দ্বিগুণ! ৬৪৫ শতাংশ।

এই চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই শোরগোল পড়ে যায় দেশজুড়ে। আরও জোরাল হয়, রাজনৈতিক দলের আয়ের উৎস প্রকাশ্যে আনার দাবি। প্রশ্ন ওঠে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে কালো টাকা ব্যবহার রোধে কেন সক্রিয় হবে না সরকার? অবশেষে রাজনৈতিক-দানে স্বচ্ছতা আনতে বুধবার পদক্ষেপ নিল মোদী সরকার।