আইজল: ভারত, মায়ানমার সীমান্তের ১৬ কিমি এলাকার ভিতরে দুদিকেই উভয় দেশের নাগরিকরা বিনা ভিসায় অবাধে যাতায়াতের যে সুযোগ পান, সন্ত্রাসবাদীরা তার ফায়দা তুলছে। তারা অস্ত্র, মাদক চোরাচালান, জাল ভারতীয় নোট পাচারের স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলেছে সেখানে।

তাই উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, অবাধে আসা যাওয়ার ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে কমিটি তৈরি হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বিশেষ সচিব (অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা) ওই কমিটির মাথায় থাকবেন। সীমান্ত রাজ্যগুলি ওই সীমান্ত দিয়ে অবাধে যাতায়াতের ব্যাপারে যেসব নিয়মবিধি অনুসরণ করে, সেগুলি পর্যালোচনা করবে কমিটি।

মায়ানমার, ভারতের ১৬৪৩ কিমি দীর্ঘ সীমান্ত চারটি রাজ্য, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড, মনিপুর ও মিজোরামকে ছুঁয়ে গিয়েছে। সেখানেই সীমান্তের দুপারে ১৬ কিমি ভিতরে বিনা ভিসাতেই ঢুকতে পারেন দু দেশের মানুষজন।

উভয় পক্ষের কর্তৃপক্ষের দেওয়া বৈধ পারমিট নিয়ে তাঁরা একে, অপরের ভূখণ্ডে ৭২ ঘন্টা থাকতে পারেন। সীমান্তে দুদেশের মানুষের দীর্ঘ সামাজিক আদানপ্রদানের ঐতিহ্য, পরম্পরা বহাল রাখতেই চালু রয়েছে এমন ব্যবস্থা।

কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের বক্তব্য, সমাজবিরোধী ও জঙ্গিরা এর সুযোগ নিচ্ছে। তারা অস্ত্রশস্ত্র, মাদক, নিষিদ্ধ সামগ্রী, জাল ভারতীয় নোট পাচার করছে। তবে যেহেতু নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে, তাই সন্ত্রাসবাদীরা ঠাঁই পাচ্ছে না। ওদের কেউ কেউ সীমান্তের ওপারেই পাকাপাকি আস্তানা গেড়ে বসেছে। অবাধ যাতায়াতের সুযোগ নিয়ে ওরা প্রায়ই ভারতে ঢুকে অপরাধ করে পালিয়ে নিরাপদ ডেরায় চলে যাচ্ছে।
তিন মাসের মধ্যে ওই কমিটি অবাধ যাতায়াতের ব্যবস্থা সঠিক ভাবে কার্যকর করার ব্যাপারে রিপোর্ট পেশ করবে। সীমান্তেই যাতে সন্ত্রাসবাদী, অপরাধীদের চিহ্নিত করে ফেলা যায়, সে ব্যাপারে নতুন নিয়ম, পদ্ধতি তৈরি করবে কমিটি।

রাজনাথ ভাষণে বলেন, আমাদের সরকার উত্তরপূর্বের উন্নয়নে গতি আনতে দায়বদ্ধ। রাস্তা, রেল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। আমরা এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে সীমান্ত এলাকাকেও জুড়তে চাই।