নয়াদিল্লি ও কলকাতা: নোট-কাণ্ডে ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় কেন্দ্র।
শুক্রবার ট্যুইটারে আবারও এক দফা প্রধানমন্ত্রীকে তুলোধনা করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদীকে ‘খারাপ রাজনীতিবিদ এবং প্রশাসক’ হিসেবে উল্লেখ করে তাঁর অভিযোগ, তিনি মিথ্যা প্রচার করে চলেছেন।
এদিন মাইক্রো-ব্লগিং সাইটে মমতা লেখেন, মোদীজি সব বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। একজন খারাপ রাজনীতিবিদ এবং তার চেয়েও খারাপ প্রশাসক। তিনি মিথ্যে বলছেন।
নোট বাতিল নিয়ে বিরোধী আক্রমণকে কার্যত নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তা সে নিজের রাজ্যে হোক বা রাজধানীতে। এদিন বিজেপি-শাসিত এনডিএ সরকারকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, বিরোধীদের মধ্যে ঐক্য রয়েছে, সেখানে আপনারাই বিভক্ত।
https://twitter.com/MamataOfficial/status/802070492060336128
এদিন মোদী সরকারকে আক্রমণ করতে মমতা হাতিয়ার করেন আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ এবং দেশের অন্যতম শীর্ষ আর্থিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই)-এর দেওয়া তথ্যকে।
ট্যুইটারে মমতা লেখেন, দেশের শীর্ষ সংস্থা সি এম আই ই জানিয়েছে, নোট বাতিলের ফলে শুধুমাত্র লেনদেনের ক্ষেত্রে দেশের ১.২৮ লক্ষ কোটি টাকা নষ্ট হয়েছে। বিশ্বখ্যাত সংস্থা মুডি'জ জানিয়েছে, নোট বাতিলের ফলে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হবে।
এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে মমতার কটাক্ষ, একদিকে সাধারণ মানুষের অবস্থা শোচনীয় আর অন্যদিকে মোদীজি নিশ্চিন্তে আছেন আর মিথ্যে কথা বলে বেড়াচ্ছেন।
https://twitter.com/MamataOfficial/status/802047553885736960
https://twitter.com/MamataOfficial/status/802047501431803904
https://twitter.com/MamataOfficial/status/802047444112445440
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সমীক্ষক সংস্থা সিএমআইই-এর একটি সমীক্ষা সামনে এসেছে! যা অনুযায়ী, নোট বাতিলের পর থেকে প্রথম ৫০দিনে ভারতীয় অর্থনীতির লোকসান হতে পারে ১ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা! যে আশঙ্কা বৃহস্পতিবারই প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ।
তাদের রিপোর্ট বলছে, সাধারণ মানুষের ঘর খরচ বাবদ দেশজুড়ে প্রতি বছর ৩১ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয় নিত্যপ্রয়োজনীয় এই জিনিসের সিংহভাগই কেনা হয় নগদে।
কিন্তু, এখন সাধারণ মানুষের হাতে নগদের যোগান নেই। তাই টান পড়ছে কেনাকাটায়। এই পরিস্থিতিতে, নোট বাতিলের ঘোষণা করা মাত্রই ৬১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানাচ্ছে সিএমআইই।
নোট বাতিলের ফলে ব্যাঙ্কগুলির ওপরও ব্যাপক চাপ পড়বে বলে মনে পড়ছে সিএমআইই। তাদের রিপোর্ট অনুযায়ী, এটিএমে পরিবর্তন, কর্মচারীদের ওভারটাইমের জন্য অতিরিক্ত বেতন এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ব্যাঙ্কগুলির খরচ হবে প্রায় ৩৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা।
ব্যাঙ্ক ও এটিএমের লাইনে দাঁড়াতে গিয়ে সাধারণ মানুষের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। যদিও, কেন্দ্রের দাবি, দীর্ঘমেয়াদী লাভের জন্যই নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।