বেঙ্গালুরু: কর্নাটক বিধানসভা ভোটের প্রচারের শেষদিনে নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করে রাহুল গাঁধীর দাবি, প্রধানমন্ত্রী তাঁকে 'ভয়' পাচ্ছেন।
ইউপিএ ২০১৯ এর নির্বাচনে জিতলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হতেই পারেন, রাহুলের এই ঘোষণাকে গতকাল একাধিক বার জনসভায় কটাক্ষ করে মোদী বলেন, লাইনে অনেক অভিজ্ঞ লোকজন থাকা সত্ত্বেও কে একজন হঠাত্ বালতি রেখে বলে দিলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী হব। এটা ঔদ্ধত্য নয়? দেশবাসী কি এমন 'অপরিণত', 'উঁচু বংশের পরিচয়ধারী নামদার'কে প্রধানমন্ত্রী পদে মেনে নেবেন?


আজ এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি কংগ্রেস সভাপতি বলেন, এই নির্বাচন রাহুলকে নিয়ে নয়। আমি শিখেছি, কীভাবে প্রধানমন্ত্রীর মোকাবিলা করতে হবে। উনি যখন জবাব দিতে পারেন না, নজর ঘুরিয়ে দেন।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে কর্নাটকের ভোটপ্রচার শেষে রাহুল গৌতম বুদ্ধের গল্প বলেন। বলেন, এক শিষ্যের সঙ্গে বসেছিলেন বুদ্ধ। একটি লোক ক্ষিপ্ত হয়ে চিত্কার করে তাঁকে আজেবাজে কথা বলে। শিষ্যটি বুদ্ধকে বলে, কেন তিনি লোকটিকে পাল্টা কিছুই বললেন না। বুদ্ধ জবাব দেন, লোকটি রেগে রয়েছে, তিনি তার আক্রমণ স্বীকার করেননি, ফলে তা তার কাছেই ফিরে গিয়েছে। রাহুল মন্তব্য করেন, মোদীর ভিতরে রাগ রয়েছে। সবার ওপর রাগ ওনার, শুধু আমি না। আমায় বিপদ বলে মনে করেন উনি।

কংগ্রেসের দলিত-প্রীতি লোকদেখানো, প্রধানমন্ত্রীর এহেন অভিযোগ প্রসঙ্গে রাহুলের বক্তব্য, আমরা ওদের সমস্যাগুলি তুলবই। এটা আমাদের কাজ। রোহিত ভেমুলা বৈষম্যের অভিযোগে প্রতিবাদ করে আত্মহত্যা করলে উনি একটি কথাও বলেন না। উনায় দলিতরা মার খেলেও চুপ করে থাকেন।

জনসভায় সনিয়া গাঁধীর বিদেশিনী পরিচয় ইস্যুও তুলে মোদী বলেছিলেন, কংগ্রেস সভাপতি কর্নাটক সরকারের সাফল্য নিয়ে ১৫ মিনিট বলুন, ওঁর মায়ের মাতৃভাষা সহ যে কোনও ভাষায়। রাহুল জবাব দেন, আমার মা ইতালিয়। কিন্তু জীবনের বেশিরভাগটা তিনি ভারতেই কাটিয়েছেন। আমার দেখা বহু ভারতীয়ের তুলনায় বেশি ভারতীয় উনি। দেশের জন্য জীবন নিবেদন করেছেন, দেশের জন্য ক্ষতি স্বীকার করেছেন। মোদীর এ ধরনের কথাবার্তায় তিনি কেমন মানুষ, সেটাই বোঝা যায়। উনি এসব বলে আনন্দ পান দেখে আমি খুশি।
মোদী, বিজেপির বিরুদ্ধে কর্নাটকের প্রভাবশালী, বিতর্কিত রেড্ডি ভাইদের আড়াল করার অভিযোগ তুলে রাহুল বলেন, সরকার ওদের বাঁচাতে সিবিআইকে সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইল্লিগাল মাইনিং-য়ে পরিণত করেছে।
প্রসঙ্গত, বিজেপি কর্নাটকে রেড্ডি ভাইয়ের দুজন, তাদের একাধিক সহযোগীকে প্রার্থী করেছে।

কেন তিনি ধর্মস্থানে, বিশেষত মন্দিরে, মন্দিরে ঘুরছেন, প্রশ্ন করা হলে রাহুল বলেন, আমি মন্দিরে গেলে বিজেপি অস্বস্তিতে পড়ে। বিজেপি তাঁকে 'ইলেকশন হিন্দু' বলেও কটাক্ষ করেছে। রাহুলের সাফাই, শুধু মন্দিরে নয়, তিনি সব ধর্মস্থানেই যান। বলেন, বিজেপি হিন্দু শব্দের অর্থ বোঝে বলে মনে হয় না।