দেহরাদুন: নরেন্দ্র মোদির গত মাসের কেদারনাথ সফরের পর থেকে সেখানে যে গুহায় তিনি ধ্যানে বসেছিলেন, সেটি দর্শনের চাহিদা গগনচুম্বী হচ্ছে ক্রমশঃ। অনলাইনে সেই গুহায় পা রাখার জন্য বুকিং চলছে জোর গতিতে। গাড়োয়াল মন্ডল বিকাশ নিগম লিমিটেডের (জিএমভিএন) ওয়েবসাইটে চলছে বুকিং। এর মধ্যেই গোটা জুলাইয়ের বুকিং শেষ। আগস্ট, সেপ্টেম্বর, অক্টোবরের জন্যও রোজই চলছে আগাম বুকিং। জানিয়েছেন জিএমভিএন-এর জেনারেল ম্যানেজার বি এল রানা। তিনি জানিয়েছেন, দেশের নানা প্রান্ত থেকে আগ্রহী লোকজন ওয়েবসাইটে ঢুকছেন। মোদি মে মাসে ঘুরে যাওয়ার পর থেকে এমন একটি দিনও যায়নি যেদিন কেউ না কেউ ধ্যান গুফায় কাটিয়েছেন।
গারোয়াল হিমালয়ে ১২৫০০ ফুট ওপর মনোরম স্বর্গীয় পরিবেশে ওই গুহার জনপ্রিয়তা দিনদিন ঊর্ধ্বমুখী হতে দেখে জেলা প্রশাসন তার আশপাশে আরও তিনটি ধ্যানের জন্য গুহা তৈরির কথা ভাবছে বলে জানিয়েছেন রুদ্রপ্রয়াগের জেলাশাসক মঙ্গেশ ঘিলদিয়াল। তিনি বলেছেন, যে গুহাটা আছে, তার কাছেই আরও তিনটি একই ধরনের গুহা নির্মাণের প্ল্যান আছে। বলতে গেলে, একটা তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। আশপাশের পাহাড়-পর্বতে বাকি দুটি নির্মাণের জায়গাও চিহ্নিত করা হয়েছে।
ঘিলডিয়াল জানান, ওই গুফা-টি প্রায় এক বছর ধরেই রয়েছে, কিন্তু ১৮ মে রাতে প্রধানমন্ত্রী তাতে ঢুকে ধ্যানে বসার পরই লোকের মধ্যে তার সম্পর্কে আগ্রহ বেড়েছে। সোস্যাল মিডিয়ায় তাঁর চোখ বন্ধ করে গেরুয়া বসনে ধ্যানমগ্ন হয়ে বসে থাকার ছবি ভাইরাল হওয়া পর্যটকদের কাছে গুহার জনপ্রিয়তা হু হু করে বাড়তে সাহায্য করেছে বলে অভিমত তাঁর। তিনি এও জানান, একদিকে কেদারনাথে পর্যটকদের জন্য আগের চেয়ে আরও ভাল পরিষেবার ব্যবস্থা হয়েছে, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর বারবার সফরের ফলে (প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইস্তক চারবার কেদারনাথ মন্দিরে এসেছেন তিনি) মন্দিরে দর্শনার্থী সংখ্যা অনেক বেড়েছে। চলতি বছরেই এপর্যন্ত ৫০ দিনে রেকর্ড ৭ লক্ষ ৬২ হাজার ভক্ত মন্দির দর্শনে এসেছেন।
এ বছর কেদারনাথ ভক্তদের জন্য খুলেছিল ৯ মে। ঘিলডিয়াল বলেন, গত বছর পুরো যাত্রার মরসুমে কেদারনাথ দর্শন করেছিলেন ৭ লক্ষ ৩২০০০ লোক। এবার অক্টোবরে কোনও একটা সময় যাত্রা শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত তিন মাসের বেশি হাতে পড়ে আছে। আশা করছি, এবার ভক্ত সমাগম হবে ১০ লাখের বেশি। কেদারনাথের ইতিহাসে এই প্রথম এটা হবে।
২০১২-য় কেদারনাথ দর্শন করেছিলেন ৫ লক্ষ ৮০ হাজার ভক্ত। ২০১৩-র মহা প্রলয় ঘটানো বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে ভক্ত সমাগম স্বাভাবিক ভাবেই অনেক কমে গিয়েছিল।