‘মা, আমি ভাল আছি। তুমিও সাবধানে থেকো।’ এক মাস আগে হিমাচল প্রদেশ থেকে ফোন করেছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের জাস্টিন। এমনটাই জানিয়েছেন তাঁর মা সুজান রীব। সেই শেষবার। তার পর থেকে ছেলের আর কোনও ফোন পান নি তিনি।
‘নিখোঁজ’ ছেলের খোঁজ করতে একেবারে মানালিতে চলে এসেছেন বছর ৬৫-র প্রৌঢ়া। জানালেন, জাস্টিন যেখানেই গিয়েছে, তাঁকে ফোন করেছে। এমনকী, ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত নেপালে ছিল তাঁর ছেলে। সেই সময়ও নিয়মিত ফোন করে সব জানিয়েছে।
কিন্তু, এবারটাই ব্যতিক্রম। সুজান জানালেন, তিনি প্রচণ্ড উদ্বেগে রয়েছেন। ইতিমধ্যেই, একটি হেলিকপ্টার ভাড়া করে কুল্লুর মান্তালাই এবং খীরগঙ্গার মধ্যে এলাকায় ছেলের তল্লাশি করেছেন সুজান। জানান, তাঁর ছেলের শেষবার ফোনে এই অঞ্চলের উল্লেখ করেছিল।
সুজানের এই খোঁজপর্বে সঙ্গ দিচ্ছেন পারবিবারিক বন্ধু জনাথন স্কিল্স, যিনি লন্ডন থেকে চলে এসেছেন। তবে, এসবের মধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সুজান।
জানান, একমাস আগেই ইমেল-এর মাধ্যমে তিনি হিমাচল পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু, তারা কোনও নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি বলে দাবি জাস্টিনের মায়ের।
এখানে এসে নতুন করে এফআইআর দায়ের করেন সুজান। তারপর পুলিশ তৎপরতা দেখায়। সুজানের অভিযোগ, এখন অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওরা এতদিন কী করছিল?
সুজান জানান, জাস্টিন জানিয়েছিল, সে পার্বতী উপত্যকায় কোনও নাগা সাধুর কাছে ধ্যান শিখছে। তারপর সে ওই সাধুর সঙ্গে খীরগঙ্গা ও মান্তালাইতে গিয়েছে।
এফআইআর মোতাবেক, জাস্টিন এরপর সাধু ও তাঁর মালবাহককে জানান, তিনি বেস ক্যাম্পে ফিরতে চান। সেখানে তাঁর মোটরসাইকেল এবং অন্যান্য সামগ্রী রয়েছে। অভিযোগ, ২৪ অগস্ট সাধুর দলের থেকে আলাদা হন জডাস্টিন। ৩ সেপ্টেম্বর শেষববার তাঁকে দেখা গিয়েছিল।
সুজানের অভিযোগ, ওই সাধু ও তার দলবল তাঁর ছেলেকে অপহরণ করেছে। তদন্তে নেমে সাধু ও এক মালবাহককে আটক করেছে পুলিশ। কুল্লুর পুলিশ সুপারের মতে, গত ১০ বছরে এখানে অন্তত ২০ বিদেশি নিখোঁজ হয়েছেন, যাঁদের এখনও কোনও হদিস মেলেনি।
তবুও, হাল ছাড়ছেন না সুজান। আশায় বুক বাঁধছেন এই ভেবে যে, ছেলে একদিন ফিরে আসবেই...