ভোপাল: ছেলে দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় ফেল করেছে। তাতে দুঃখ নেই। বরং মিষ্টি বিলিয়ে, বাজনা বাজিয়ে মেতেছে উত্সবে। এই ঘটনায় চোখ কপালে ওঠে মধ্যপ্রদেশের সাগর শহরের বাসিন্দাদের। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে এর কারণ জানানো হলে বিস্ময়ের ঘোর কেটে সহমর্মিতায় ভরে যায় তাঁদের হৃদয়।
পরিবারের দাবি, অল্প বয়সের ব্যর্থতা কোনও ছেলের মনোবল যেন ভেঙে দিতে না পারে। কারণ, এটাই জীবনের শেষ পরীক্ষা নয়। পরিবারের এক সদস্য বলেছেন, পরীক্ষায় ফেল করে ও বোকার মতো কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তা করুক, তা আমরা চাই না।


ওই পরীক্ষার্থী চারটি বিষয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। কিন্তু ফল জানার পর বাবা যেভাবে তাকে জড়িয়ে ধরল, তাতে অবাক হয়ে যায় সে। এরপর আবার যখন বাবা তার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজনদের ডাকলেন, মিষ্টি বিলোলেন, বাজনা বাজিয়ে শোভাযাত্রা বের করলেন, তখন তো সেই বিস্ময় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যায় ওই পরীক্ষার্থীর।
আনন্দ-উত্সবে শেষপর্যন্ত সামিল হন স্থানীয়রাও। তাঁরা ওই পড়ুয়ার বাবার ইতিবাচক মানসিকতার প্রশংসা না করে পারছেন না।
ওই পরীক্ষার্থীর বাবা সুরেন্দ্র বলেছেন, কোনও একটা ক্ষেত্রে ব্যর্থতা মানেই জীবনের সব সম্ভাবনার পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া নয়। আমি এই বার্তাই দিতে চাইছি।আমার ছেলের এখন জীবনের অন্য বিকল্পগুলি ইতিবাচক মানসিকতার সঙ্গে খুঁজে দেখতে হবে এবং কখনওই হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়।
পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের এই মানসিকতায় আপ্লুত ওই পরীক্ষার্থী। সে চাইছে, অন্যান্যদের বাবা-মাও যেন একই ধরনের ইতিবাচক মনোভাব গ্রহণ করেন।
তবে ওই পড়ুয়া জানিয়েছে,এরপর সে আর পড়াশোনা করবে না। বাবার পরিবহণ ব্যবসাকেই জীবিকা হিসেবে বেছে নেওয়ার চেষ্টা করবে।
গত সোমবার মধ্যপ্রদেশ বোর্ডের পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর ১১ জন পড়ুয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তাদের মধ্যে ছয়জন মারা গিয়েছে। এবার দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় ৩৪ শতাংশ এবং দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষায় ৩৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে।