নয়াদিল্লি : মধ্যপ্রদেশের কমলনাথের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস সরকারের অবিলম্বে বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষার দাবি জানিয়ে বিজেপির দায়ের করা পিটিশনের শুনানি আগামীকাল সকাল সাড়ে দশটায় হবে সুপ্রিম কোর্টে। এ ব্যাপারে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের আর্জি সম্পর্কে মধ্যপ্রদেশ সরকারকে বুধবারের মধ্যে জবাব দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। আজ এই মামলার শুনানিতে আদালত বলেছে যে, বিধানসভার অধ্যক্ষর বক্তব্য না জেনে এক্ষেত্রে কোনও নির্দেশ দেওয়া যায় না। বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলেছে, আগামীকাল সাড়ে দশটার শুনানির জন্য রাজ্য সরকার ও বিধানসভার সচিব সহ অন্যান্যদের জবাব চাইবে।
উল্লেখ্য, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার দলত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ঘটনায় টলমল মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস সরকার। কারণ, জ্যোতিরাদিত্যর অনুগামী ২২ বিধায়ক ইস্তফা দিয়েছেন। যদিও তাঁদের মধ্যে মাত্র ছয় বিধায়কের ইস্তফা গৃহীত হয়েছে। এরফলে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ক্ষেত্রে কমলনাথের সরকারকে যে সমস্যার মুখে পড়তে হবে তা নিয়ে সংশয়ের অবকাশ নেই রাজনৈতিক মহলে। বিরোধী বিজেপি দাবি করেছে যে, কমলনাথ সরকারে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। যদিও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, তাঁদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।
রাজ্যপাল লালজি টন্ডন গতকাল বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের প্রথমদিন আস্থা ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। কিন্তু ওই নির্দেশ পালন করা হয়নি। করোনাভাইরাসজনিত উদ্বেগের কারণ দেখিয়ে অধ্যক্ষ এনপি প্রজাপতি আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত সভা মুলতুবি করে দেন। এরপরই শিবরাজ ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সহ বিজেপির ১০ বিধায়ক সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে শিবরাজের পক্ষে সওয়াল করতে গিয়ে প্রবীণ অ্যাডভোকেট মুকুল রোহতগি বলেন যে, এ ধরনের ঘটনায় বিধানসভায় শক্তি পরীক্ষার দাবি খুবই যুক্তিসঙ্গত। এ ধরনের ঘটনায় অন্যপক্ষ সাধারণত আদালতের দ্বারস্থ হয়।
এ ব্যাপারে আদালত জানায় যে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলিকে নোটিশ দিতে হবে এবং আগামীকাল শুনানি হবে।
এরপর আদালত ১৬ কংগ্রেস বিধায়কদের পক্ষে সওয়ালকারী প্রবীণ আইনজীবী মনিন্দার সিংহর বিবেচনার মধ্যে নেয়। ওই বিধায়করা শিবরাজের পিটিশনে পক্ষ হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। মনিন্দার সিংহ বলেন, ওই ১৬ বিধায়ক চান যে, তাঁদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হোক। বেঞ্চ ওই বিধায়কদের পিটিশনের প্রতিলিপি রাজ্য সরকার, অধ্যক্ষ ও অন্যান্যদের চিরাচরিত মাধ্যম সহ ই-মেল মারফত্ পাঠানোর অনুমতি দেয়।


এদিকে, কংগ্রেসের দলত্যাগী বিধায়করা কমলনাথ সরকারের বিরুদ্ধে তাঁদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। জ্যোতিরাদিত্যের অনুগামী ওই বিধায়করা ব্যাঙ্গালোরে রয়েছেন। তাঁরা সিন্ধিয়ার প্রতি তাঁদের আনুগত্যের কথাও জানিয়েছেন। বিধায়ক ইমারতি দেবী বলেছেন, সিন্ধিয়াই আমাদের নেতা। তিনি বললে আমি কুয়োতে ঝাঁপিয়ে পড়তেও প্রস্তুত।
অন্য এক বিধায়ক গোবিন্দ সিংহ রাজপুত বলেছেন, কমলনাথজি আমাদের কথা ১৫ মিনিটের জন্যও কখনও শোনেননি। তাহলে, আমাদের এলাকার উন্নয়নের কথা আমরা কাকে বলব?