গতকাল জেটের মুম্বই থেকে দিল্লিগামী বিমানের শৌচাগারে মেলে একটি হুমকি চিরকূট। সেখানে বলা হয়, মালপত্র রাখার জায়গায় বোমা রাখা রয়েছে। সেখানে ছিল বিমান ছিনতাইয়ের হুমকিও। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিমানটি আমেদাবাদ বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে। এই ঘটনায় গতকালই ক্রাইম ব্র্যাঞ্চ মুম্বইয়ের বাসিন্দা ৩৭ বছরের কিশোর সাল্লাকে আটক করে। আজ তাঁকে কঠোর বিমান ছিনতাই দমন আইনের ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ১৯৮২-র পুরানো আইনের বদলে গত জুলাইতে এই আইন বলবত্ হয়েছে। পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (অপরাধ) জে কে ভট্ট জানিয়েছেন, নয়া আইনে এই প্রথম কাউকে গ্রেফতার করা হল।
এই আইনে আমৃত্য কারাদণ্ডের সংস্থান রয়েছে। অপরাধীর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করারও সংস্থান রয়েছে আইনে।
পুলিশ জানিয়েছে, কিশোর সাল্লা আদতে গুজরাতের আমরেলি জেলার দেদান গ্রামের বাসিন্দা। অনেক বছর ধরেই তিনি মুম্বইতে রয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, আমেদাবাদে জরুরি অবতরণের পর বিমান থেকেই কিশোর সাল্লাকে আটক করা হয়। জেরায় কিশোর সাল্লা স্বীকার করেছেন যে, নিজের ল্যাপটপ ও প্রিন্টার ব্যবহার করেই ওই হুমকি চিরকূটটি তৈরি করেন তিনি। হুমকির ভাষা ইংরেজি থেকে উর্দুতে অনুবাদের জন্য তিনি গুগল ট্রানস্লেটর পরিষেবা ব্যবহার করেন।
চিরকূটটিতে ইংরেজি ও উর্দুতে হুমকি দিয়ে লেখা ছিল, ‘অপহরণকারীরা বিমানটি ঘিরে ফেলেছে। ১২ জন বিমানে আছে। বিমানটি অবতরণ যেন না করা হয়। সোজা পাক অধিকৃত কাশ্মীরে উড়ে যেতে হবে’।
পাক অধিকৃত কাশ্মীর শব্দটিতেই তদন্তকারীরা সন্দিহান হয়ে ওঠেন। কারণ, পাকিস্তানের জঙ্গিরা সাধারণত ওই এলাকাকে আজাদ কাশ্মীর বলেই উল্লেখ করে।
পুলিশ জানিয়েছে, কিশোর সাল্লা ধনী ব্যবসায়ী। মুম্বইয়ের জাভেরি বাজারে তাঁর অফিস রয়েছে এবং শহরের অভিজাত এলাকায় রয়েছে তাঁর ফ্ল্যাট। তিনি বিবাহিত। তাঁর দুই সন্তানও রয়েছে। গার্লফ্রেন্ড জেট এয়ারওয়েজের দিল্লি অফিসে কাজ করেন। কিশোর সাল্লার কথা মতো তাঁর গার্লফ্রেন্ড চাকরি ছাড়তে রাজি না হওয়ায় জেটের বিমানে হুমকি চিরকূট রাখার কথা মাথায় আসে তাঁর।
পুলিশ জানিয়েছে, এর আগেও একবার বিমানে খাবারে আরশোলা রেখে চিত্কার চেঁচামেচি জুড়েছিলেন কিশোর সাল্লা। এই ঘটনায় তাঁর গার্লফ্রেন্ডকেও পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করবে বলে জানা গেছে।