নয়াদিল্লি: দেশে চাকরি করার সময় সিনিয়র কলিগ বারবার যৌন হেনস্থা করেন তাঁকে। স্বামী, সন্তানদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়া পাড়ি দিয়েও লাভ হয়নি। সেখানে গিয়েও সেই প্রাক্তন বস তাঁর ওপর শারীরিক নিগ্রহ করেন। এমনই অভিযোগ করলেন অনাবাসী এক মহিলা।


অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, প্রতারণা, ভয় দেখানোর মত একাধিক অভিযোগ আনা হয়েছে।

৩৮ বছর বয়সি ওই মহিলা বলেছেন, এক সংস্থায় এক বিভাগে চাকরি করতেন তাঁরা, তবে তিনি ছিলেন গুরুগ্রামে, অভিযুক্ত থাকতেন হায়দরাবাদে। কাজের সূত্রে মহিলার নিয়মিত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হত। টেলিকনফারেন্সে কথা হত, অভিযুক্ত নিয়মিত গুরুগ্রাম আসতেনও। তিনি চেষ্টা করতেন তাঁর সঙ্গে ভাব জমিয়ে ফেলার, তাই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতেন, সকলের সামনে কাজের প্রশংসা করতেন, কথা বলতেন স্ত্রীর দুর্ব্যবহার সম্পর্কে।

২০১৩-র মার্চে মহিলা বাড়িতে একা থাকবেন জেনে তিনিও হাজির হন। তাঁকে ঠাণ্ডা পানীয় দিয়ে মহিলা কয়েক মিনিটের জন্য রান্নাঘরে যান। ফিরে এসে পানীয়টি শেষ করার অল্প সময় পর জ্ঞান হারান তিনি। জ্ঞান ফিরলে দেখেন বিছানায় নগ্ন অবস্থায় রয়েছেন, বস বসে চেয়ারে। তিনি হুমকি দেন, এ ব্যাপারে মুখ খুললে চাকরি তো যাবেই, সম্মানহানিও হবে কারণ ঘটনার ছবি, ভিডিও প্রকাশ করে দেবেন তিনি।

সম্মানরক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে লোকটির সঙ্গে দেশের নানা শহরের বড় বড় হোটেলে তাঁকে রাত কাটাতে হয়। ছেড়ে দেওয়ার জন্য কাকুতিমিনতি করলে অভিযুক্ত তাঁর স্বামীকে সব বলে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এমনকী মহিলার কাছ থেকে লাখ লাখ টাকাও আদায় করেন তিনি। একবার বলেন, ২০ লাখ টাকা দিলে তাঁর ওপর নিগ্রহ বন্ধ হবে। তাতেও তিনি রাজি হয়ে যান। অথচ টাকা দেওয়ার মাত্র দিনকয়েক পর ফের তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চলে।

অভিযোগকারিণীর দাবি, ওই ব্যক্তি এমন পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তাঁর খবর রাখতেন, যে পরিবারের সঙ্গে তাঁর অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কেও দানতেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার পর তাঁর চরিত্র সম্পর্কে তাঁর স্বামীকে লম্বা ইমেল করেন। সেই মেল দেখে তাঁর মনে হয়, বস তখনও ফলো করছেন তাঁকে। মেলবোর্নের রাস্তায় একদিন হাঁটার সময় তাঁর কাঁধে পিছন থেকে কেউ হাত দেয়, নিজেকে ওই ব্যক্তি বলে পরিচয় দিয়ে বলে, মরার জন্য তৈরি হও। কিন্তু পিছন ফিরে তিনি কাউকে দেখতে পাননি।