পটনা: তাঁর ছেলেদের ব্যবসা করার অধিকার আছে, তাঁরা তো আর না খেয়ে মরতে পারেন না। দুই পুত্র তেজস্বী ও তেজ প্রতাপ যাদবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদব এ কথা বললেন। লালুর দুই ছেলেই এখন বিহারের মন্ত্রী, দুজনের বিরুদ্ধেই রীতিমত বড় অঙ্কের দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে।


তেজ প্রতাপ ও তেজস্বী পটনার বাইরের দিকে ২ একর জমির মালিক। ওই জমির একজন তৃতীয় মালিকও আছেন, তিনি হলেন রাবড়ি দেবী, তেজ প্রতাপ ও তেজস্বীর মা। জমিটির দাম অন্তত ৬০ কোটি টাকা। এই জমিতে বিহারের বৃহত্তম শপিং মল করছেন লালুর দলেরই এক নেতা, যিনি রাজ্য মন্ত্রিসভাতেও রয়েছেন। গোটা প্রকল্পের খরচ পড়বে ৫০০ কোটি টাকার মত।

বিজেপি নেতা সুশীল কুমার মোদী অভিযোগ করেছেন, ওই জমি বেআইনিভাবে হাতবদল হয়ে লালু পুত্রদের দখলে এসেছে। ২০০৮-এ লালু যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখন হর্ষ কোচার নামে এক উদ্যোগপতিকে পুরী ও রাঁচিতে রেলের দুটি হোটেল ১৫ বছরের লিজ দেন তিনি। কিন্তু তার আগে হর্ষ পটনায় তাঁর ২ একর জমি লালুর দলের এক সাংসদের স্ত্রীর সংস্থাকে বেচে দেন।

গত কয়েক বছরে সেই সংস্থার মালিকানাই হাত বদল হয়ে লালুর স্ত্রী-পুত্রদের দখলে এসেছে। সংস্থার সব ঠিকানা এখন লালুর বাসভবন। সংস্থার নামও বদল হয়েছে, লালু জানিয়েছেন, নতুন সংস্থার নাম লারা-লালু ও রাবড়ির নামের আদ্যাক্ষর দিয়ে।

সুশীল মোদীর অভিযোগ, সম্পত্তির বেনামি হাতবদলের মাধ্যমে লালুর ছেলেরা এক লপ্তে কয়েকশো কোটি টাকার মালিক হয়ে বসেছেন। মন্ত্রীদের সরকারের কাছে নিজেদের সম্পত্তির খতিয়ান দেওয়ার দরকার পড়লেও লালু পুত্ররা ওই জমির ব্যাপারে উচ্চবাচ্য করেননি।

যদিও লালু অস্বীকার করেছেন দুর্নীতির অভিযোগ। তাঁর বক্তব্য, হর্ষ কোচারকে রেলের দুটি হোটেল লিজ দেওয়া হয়, কারণ তিনিই সর্বোচ্চ দর দিয়েছিলেন। তাই তাঁর ওই বহু মূল্য জমি বিক্রির সঙ্গে দুর্নীতির কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন তিনি।

তবে সংশ্লিষ্ট জমি নিয়ে গত সপ্তাহ থেকে সরকারি স্তরে তদন্ত শুরু হয়েছে। সুশীল মোদী অভিযোগ করেন, তেজ প্রতাপ প্রভাব খাটিয়ে পটনা চিড়িয়াখানাকে তাঁদের ওই জমি থেকে খোঁড়া ৪৪ লাখ টাকা মূল্যের মাটি কিনতে বাধ্য করেছেন। কারণ তেজ প্রতাপ বন দফতরের মন্ত্রী, চিড়িয়াখানা তাঁর দফতরেই পড়ে। চিড়িয়াখানা আধিকারিকরাও স্বীকার করে নিয়েছেন, টেন্ডার ছাড়া মাটি কেনা হয়েছে, তবে তা তেজ প্রতাপের সম্পত্তি হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তাঁরা।