আগরতলা: বাম সরকারের জমানায় ত্রিপুরার মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বিগত দুই দশক ধরে মার্কসবাদী প্রচার চালিয়েছে বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমারদেবের। তিনি বলেছেন, রাজ্য সরকার পরিচালিত বিদ্যালয়গুলিতে শীঘ্রই এনসিইআরটি-র পাঠক্রম চালু করা হবে। রাজ্য পর্ষদের পরিবর্তে এনসিইআরটি-র পাঠক্রম গ্রহণের ব্যাপারে সরকার একটি কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলেও জানিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী।
বাম আমলে ত্রিপুরা স্বাক্ষরতার দিক থেকে ছিল দেশের সবচেয়ে এগিয়ে থাকা রাজ্য। এ রাজ্যের স্বাক্ষরতার হার ৯৫ শতাংশ। নতুন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যে  সকলের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য নীতির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
উল্লেখ্য, বিগত বিধানসভা নির্বাচনে আড়াই দশকের বাম জমানার অবসান ঘটিয়ে ত্রিপুরায় ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। ভোটে ৫৯ টি আসনের মধ্যে ৪৩ আসনে জয়ী হয় বিজেপি জোট।
নতুন বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'শিক্ষার ক্ষেত্রে তিনি শুধু সংখ্যা নয়, গুণমানের ওপর গুরুত্ব দিতে চান। বামেরা চেয়েছিল যে, ত্রিপুরার পড়ুয়ারা শুধু মাও (জেদং) পড়ুক, হিন্দু রাজাদের ভুলে যাক। তারা মহাত্মা গাঁধীকেও পাঠ্যসূচী থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। আমি এবার সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে এনসিইআরটি-র পাঠ্যসূচী চালু করতে চাই, যেখানে ত্রিপুরার ইতিহাস নিয়েও একটা অধ্যায় থাকবে'।
বিপ্লব দেব বলেছেন, ত্রিপুরায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পাঠ্যবইতে রাশিয়া ও ফরাসি বিপ্লব রয়েছে। কয়েকটি পাতায় আবার ইংল্যান্ডে ক্রিকেটের জন্মবৃতান্তও রয়েছে। এমনকি নাত্সিবাদ ও হিটলারের উত্থানও পড়ানো হয়। বিপ্লব দেব বলেছেন, পড়ুয়াদের কার্ল মার্কস ও হিটালার সম্পর্কে পড়ানো হয়। কিন্তু ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের উল্লেখ নেই।
প্রাচীন ভারতের ইতিহাসের বহু অধ্যায়ই সিলেবাসে নেই অভিযোগ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, পাঠক্রম ঢেলে সাজাতে সুপারিশের জন্য তিনি একটি কমিটি গঠন করবেন। তিনি এনসিইআরটি-র পাঠ্যসূচী অন্তর্ভূক্ত করার পক্ষপাতী বলে জানিয়েছেন বিপ্লব দেব।
বিপ্লব কুমার দেবের আরও অভিযোগ, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার যে অফিসে বেশ কয়েক বছর ধরে বসতেন, সেখানে তাঁর টেবিলে কোনও জাতীয় পতাকা ছিল না। সেই টেবিলে তিনি জাতীয় পতাকা রেখেছেন বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।