তিরুবনন্তপুরম: মেডিক্যালে জাতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষা (ন্যাশনাল এলিজিবিটিলি অ্যান্ড এন্ট্রাস টেস্ট বা এনইইটি)-য় পরীক্ষার্থীদের জালিয়াতি ও বেনিয়ম মোকাবিলায় রোখার নামে বাড়াবাড়ি। কেরলের কান্নুরে একটি পরীক্ষা গ্রহণ কেন্দ্রে ১৭ বছরের এক ছাত্রীকে অন্তর্বাস খুলতে বাধ্য করা হল। এই ঘটনা ঘিরে সারারাজ্যেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পর স্কুলের বাইরে বিক্ষোভ দেখান অভিভাবকরা।


উত্তর কেরলের কান্নুরের ওই পরীক্ষার্থী বলেছে, গতকাল রবিবার সকাল ৯.২০ নাগাদ সে পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রে পৌঁছয়। পরীক্ষা শুরু হতে তখন তাঁর মাত্র ১০ মিনিট দেরী।

পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রের বাইরে বসানো মেটাল ডিটেক্টরে তার অন্তর্বাসে থাকা ধাতু ধরা পড়ে। সে স্টিলের ক্লিপ লাগানো ব্রা পরেছিল। কর্তৃপক্ষ তাকে ওই অন্তর্বাস খোলার নির্দেশ দেয়। কাছাকাছি কোনও টয়লেট না থাকায় সে সেখানেই তা খুলে বাইরে অপেক্ষারত মায়ের হাতে দেয়।

ওই ছাত্রী বলেছে, এটা খুবই অপমানজনক অভিজ্ঞতা।

ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর জেলা কালেক্টর মীর মহম্মদ আলি বলেছেন, তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের সদস্য প্রমেলা দেবীও ঘটনার সমালোচনা করে জেলা প্রশাসনের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছেন।

এই সর্বভারতীয় পরীক্ষায় বেনিয়ম রুখতে পরীক্ষাগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে প্রচুর সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন  পরীক্ষার্থীদের দেহতল্লাশি, পোশাক বিধির মতো একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু বহু পড়ুয়াই এ ধরনের কড়াকড়ির সমালোচনা করেছে। তারা বলছে, পরীক্ষাকেন্দ্রগুলি যেন যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। অপ্রয়োজনীয় হেনস্থার মুখেও পড়তে হচ্ছে তাদের।

এক পরীক্ষার্থীর বাবা বলেছেন, এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কোনও কোনও আধিকারিক তো শৃঙ্খলার নামে ধর্ষকামী মানসিকতা চরিতার্থ করেছেন। এইসব আধিকারিকদের অবিলম্বে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে।

পরীক্ষার ১০ মিনিট আগে যে পরীক্ষার্থীকে অন্তর্বাস খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছে তার মানসিক অবস্থা কী হতে পারে, তা সহজেই অনুমান করা যায়। ওই ছাত্রী বলেছে, পরীক্ষা দেওয়ার সময় সে খুবই ভড়কে গিয়েছিল। সে জানিয়েছে, তার আরও অনেক বন্ধুকেও একই ধরনের কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু সামাজিক কলঙ্কের ভয়ে তারা কোনও উচ্চবাচ্য করেনি।

বহু ছাত্রীর অভিযোগ, নাছোড় আধিকারিকরা তাদের জামার হাতা কাঁচি দিয়ে কেটে ছোট করে দিয়েছেন।

এই ঘটনায় কেরলে তীব্র বিতর্ক তৈরি করেছে। সিপিআই নেত্রী অ্যানে রাজা সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।