নয়াদিল্লি: লাভ জেহাদ মামলায় কেরলের মেয়ে হাদিয়ার মুসলিম প্রেমিক শাফিন জাহানের সঙ্গে বিয়ের ব্যাপারে তদন্ত করা যাবে না বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। গত বছর কেরল হাইকোর্ট হাদিয়া, শাফিনের বিয়ে বাতিল করে দিয়েছিল। আজ হাদিয়া মামলার শুনানিতে জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-র তরফে জানানো হয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাদের তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি  হয়েছে। তবে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বলে, আপনারা তদন্তে এগোন বা কাউকে গ্রেফতার করুন, তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই আমাদের। আপনারা তদন্ত করতেই পারেন, তবে ওদের বিয়ে নিয়ে নয়। লাভ জেহাদ নিয়ে তদন্ত চলতে পারে, অন্য যে কোনও বিষয়ে তদন্ত হোক, কিন্তু ওদের বিয়ে নিয়ে নয়। ওই বিয়ের বৈধতাকে প্রশ্ন করা যাবে না। বিয়েকে ফৌজদারি অপরাধ, চক্রান্ত থেকে আলাদা করে দেখতে হবে। নয়তো এতে খারাপ নজির তৈরি হবে। আমরা শুধু খতিয়ে দেখব আদালত বিয়ে বাতিল করতে পারে কিনা। এক প্রাপ্তবয়স্কের পছন্দের মানুষকে বিয়ে করার অধিকারই আমাদের বিচার্য বিষয়। বিয়ের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করতে পারি না আমরা। কে ভাল, আর কে খারাপ লোক, সেটা ঠিক করবে হাদিয়াই।
বেঞ্চ আরও জানায়, হাদিয়াই তার সামনে হাজিরা দিয়ে বলেছে যে, সে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছে শাফিনকে।
গত নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট হাদিয়াকে তার বাবা-মায়ের হেফাজত থেকে মুক্ত করে। তাঁরা অভিযোগ করেছিলেন, হাদিয়ার মগজধোলাই করে ধর্ম বদলাতে বাধ্য করা হয়েছে। তাকে তামিলনাড়ুর কলেজে আবার পড়াশোনা শুরু করার অনুমতিও দিয়েছিল সর্বোচ্চ আদালত। শাফিন জাহানকে বিয়ের আগে ওখানেই পড়ত হাদিয়া।
একটি বিয়ে সংক্রান্ত সাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ হয়েছিল হাদিয়া, শাফিনের। এনআইএ-র অবশ্য দাবি, ওই সাইটের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের যোগ আছে।
হাদিয়ার বাবা-মা শাফিনের সঙ্গে তার বিয়ে মানতে নারাজ। হাদিয়াকে কট্টরপন্থী আদর্শে দীক্ষিত করা হয়েছে, তাকে সিরিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে দাবি তাঁদের।
গত মে মাসে তাঁদের পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতেই বিয়ে বাতিল করে হাদিয়াকে অভিভাবকদের কাছে ফিরে যেতে বলে কেরল হাইকোর্ট। শাফিন সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন, হাদিয়া প্রাপ্তবয়স্ক, নিজের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে তার। সম্প্রতি ওমান থেকে দেশে ফেরেন তিনি। সেখানে গিয়েছিলেন কর্মসূত্রে।