নয়াদিল্লি: ঋণে নেওয়া প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা ফেরত দিতে চেয়ে ভাসা ভাসা প্রস্তাব দিয়েছিলেন নীরব মোদী। এমনটাই দাবি করল পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক।


চলতি সপ্তাহেই প্রায় ১১,৪০০ কোটি টাকার ওই জালিয়াতির হদিশ পায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রায়্ত্ত ব্যাঙ্ক পিএনবি। অভিযোগ, অন্যান্য ঋণপ্রদানকারী সংস্থার থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য ব্যাঙ্কের মুম্বই শাখার নামে জাল লেটার অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং (এলওইউ) জোগাড় করেছিলেন নীরব ও তাঁর মামা মেহুল চোকসি।

এই লেটার অফ আন্ডারটেকিং হল কার্যত এক ধরনের গ্যারান্টি। যার অর্থ নীরব মোদী টাকা মেটাতে না পারলে তা মেটাতে হবে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ককে। এই গ্যারান্টির নথি দেখিয়ে ইলাহাবাদ ও অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের হংকং শাখা থেকে ২৮০ কোটি টাকা ঋণ জোগাড় করেন নীরব। কিন্তু, সেই ঋণ তিনি শোধ করেননি। ফলে নীরব মোদীর নেওয়া ২৮০ কোটি টাকা শোধ করতে হয় পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ককে। এরপর পিএনবি-কে আর সেই টাকা মেটাননি নীরব মোদী।

পিএনবির কাছ থেকে ২৯ জানুয়ারি অভিযোগ পেয়ে সিবিআই প্রাথমিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে ২৮০ কোটি টাকার জালিয়াতি মামলার তদন্ত শুরু করে। পরে জানা যায়, কিছু বন্ধক না রেখেই, আরও লেটার অফ আন্ডারটেকিং আদায় করে নেন শিল্পপতি নীরব মোদী। মোট জালিয়াতির পরিমাণ ১১,৪০০ কোটি টাকার বেশি। এ ব্যাপারে এ মাসের ১৩ তারিখ সিবিআইকে ফের অভিযোগ করে ব্যাঙ্কটি।


পিএনবির দুই আধিকারিকের যোগসাজসে নীরব মোদী ও তাঁর সহকর্মীরা গত বছর বিদেশ থেকে হিরে আমদারি নামে ব্যাঙ্ক-কে না জানিয়েই ৮টি অর্থ ঋণ সংক্রান্ত এলওইউ ইস্যু করেন। নীরবের বিভিন্ন সংস্থায় তল্লাশি চালিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

এদিন ব্যাঙ্কের সিএমডি সুনীল মেটা জানান, এই জালিয়াতি মামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০ অফিসারকে সাসপেন্ড করেছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য নীরব ভাসা ভাসা প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু, নির্দিষ্ট করে কিছুই তিনি জানাননি।

মেটার দাবি, নীরব কখনই ব্যাঙ্কে সশরীরে হাজির হননি। তাঁকে টাকা ফেরতের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা পেশ করতে বলা হলে, তিনি ভাসা ভাসা কথা জানান, যার কোনও সারবত্তা ছিল না। মেটা জানান, টাকা ফেরত আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বিভিন্ন তদন্তকারী সংস্থা। ইতিমধ্যেই, অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে শুরু করে দিয়েছে ইডি।