পটনা: বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে নীতীশ কুমার পদত্যাগ করার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন আরজেডি নেতা লালুপ্রসাদ যাদব। তাঁর দাবি, নীতীশের বিরুদ্ধে খুন ও অস্ত্র আইনে মামলা চলছে। সেই মামলায় রেহাই পাবেন না বুঝেই তিনি পদত্যাগ করলেন। খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত হয়ে তিনি কী করে মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসেছিলেন? আরজেডি এই মামলার কথা জানত। কিন্তু এতদিন এ বিষয়ে কিছু বলেনি। পদত্যাগ করার পর নীতীশ এবার বিজেপি-র সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন বলেও মনে করছেন লালু।

নীতীশের বিরুদ্ধে জোটধর্ম পালন না করার অভিযোগ করে লালু বলেছেন, ‘যখনই নীতীশ কোনও সমস্যায় পড়ছেন, আমি সেই সমস্যার সমাধান করে তাঁকে রাজ্য শাসন করতে এগিয়ে দিয়েছি। কিন্তু তিনি রাজ্যের মানুষের গালে চড় মারলেন। বিজেপি-র সঙ্গে জোট ভাঙার সময় নীতীশ বলেছিলেন, মাটিতে মিশে যাবেন, কিন্তু বিজেপি-র সঙ্গে জোট করবেন না। তিনি সংঘ-মুক্ত ভারত গড়ার কথাও বলেছিলেন। কিন্তু এখন দাঙ্গা করে এমন একটা দলের সঙ্গে তিনি হাত মেলাতে চলেছেন। তাঁর পদত্যাগ পূর্ব পরিকল্পিত। তিনি হয় বিহারে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে চাইছেন, না হলে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়তে চাইছেন।’

নীতীশ পদত্যাগ করার পরেও আরডেজি, জেডিইউ ও কংগ্রেসের জোট বহাল রাখার বিষয়ে নয়া সূত্রের কথা বলেছেন লালু। তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী, এখন বিহার বিধানসভায় সবচেয়ে বেশি আসনবিশিষ্ট দল আরজেডি সরকার গঠনের দাবি পেশ করতেই পারে। নীতীশ ও উপ-মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বদলে তৃতীয় কাউকে নেতা বেছে নিক তিন দল।

তেজস্বীর বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে লালু বলেছেন, গতকাল রাতে তাঁর সঙ্গে নীতীশের কথা হয়। তেজস্বীর সঙ্গেও তাঁর ৪০ মিনিট কথা হয়। নীতীশ তেজস্বীকে পদত্যাগ করতে বলেননি। তিনি দুর্নীতির অভিযোগের ব্যাখ্যা চাইছিলেন। আমরা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলি। তাঁরা বলেন, প্রকাশ্যে এসব বিষয়ে কথা বললে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিরই সুবিধা হবে। জেডিইউ নেতারা পুলিশ বা সিবিআই আধিকারিক নন। তাই তাঁদের কথায় ব্যাখ্যা দেওয়া যাবে না।

বিহারে জোট সরকারের শরিক দল কংগ্রেস নীতীশের ইস্তফায় হতাশা প্রকাশ করেছে। দলীয় মুখপাত্র রণদীপ সূরজেওয়ালা বলেছেন, বিহারের মানুষ পাঁচ বছরের জন্য এই সরকারকে নির্বাচিত করেছিলেন। কংগ্রেস জনতার সেই রায়কে সম্মান জানাবে। নীতীশের প্রতি কংগ্রেস সভানেত্রী ও সহ-সভাপতির শ্রদ্ধা রয়েছে।