চেন্নাই: জয়ললিতার মৃত্যু নিয়ে তাঁর দলের অন্দরেই হাজারো প্রশ্ন উঠেছিল। অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন, জয়ললিতার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। কিন্তু, এক ব্রিটিশ চিকিৎসক জানিয়ে দিলেন, তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর মৃত্যুতে কোনওপ্রকার ষড়যন্ত্র বা ধোঁয়াশা নেই।
জয়ললিতার মৃত্যুর নেপথ্যে কোনও বিষক্রিয়ার যোগসূত্র আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে এক বিশেষজ্ঞ কমিটির গঠন করা হয়েছিল। ওই কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন লন্ডনের বিশিষ্ট চিকিৎসক রিচার্ড বিয়েল। কমিটিতে অ্যাপোলো এবং সরকারি চিকিৎসকরাও ছিলেন।
সোমবার, ওই দল জানিয়ে দিয়েছে, নেত্রীর মৃত্যুতে কোনওপ্রকার ষড়যন্ত্র নেই। এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে তদন্ত রিপোর্ট ঘোষণা করা হয়। এদিন উল্টোদিক থেকে বেশ কড়া প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় বিয়েল ও তাঁর দলকে। উত্তরে তিনি আশ্বাস দেন, জয়ললিতার চিকিৎসা কোনও গাফিলতি হয়নি।
বিয়েল জানান, তাঁর জীবনে তিনি একই ধরনের ঘটনা আগেও প্রত্যক্ষ করেছেন। ফলে, সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, কোনওবারই এর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন হয়নি, যেমনটা এবার ঘটল।
বিয়েলের দাবি, গত ২২ সেপ্টেম্বর জয়ললিতাকে যেদিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, তখন তাঁর চেতনা ছিল। তবে, তিনি সেপসিস-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন। বিশ্বখ্যাত ইন্টেনসিভ কেয়ার বিশেষজ্ঞ বিয়েল জানান, ওই সংক্রমণের কারণ জানা যায়নি।
গত ৫ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে মৃত্যু হয় ডয়ললিতার। তার আগের দিন হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। এই প্রসঙ্গে, বিয়েল যোগ করেন, হাসপাতালে প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসায় যথাযথভাবেই হয়েছিল। তাঁর দাবি, হাসপাতালে যথাসম্ভব ভাল চিকিৎসা হয়েছে।
যদিও, বিষয়টিকে এত সহজভাবে নিতে নারাজ জয়ললিতার বহু অনুগামী। কারণ, জয়ললিতার মৃত্যুর নেপথ্যে ‘বিষক্রিয়ার’ অভিযোগ সামনে এসেছিল এবং অভিযোগের আঙুল উঠেছিল শশীকলা নটরাজনের দিকেই!
গতকালই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন ও পনীরসেলভম। একইসঙ্গে, শশীকলাকে এআইএডিএমকে দলের পরিষদীয় দলনেত্রী হিসেবে মনোনীত করা হয়। অর্থাৎ, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন শশীকলা। দলের তরফে এই কথা জানিয়েও দেওয়া হয়। তার ২৪-ঘণ্টার মধ্যেই চিকিৎকদের এই সার্টিফিকেট।
সব মিলিয়ে জয়ললিতার ‘মৃত্যুরহস্যের’ যবনিকাপাত হল কি না তা সময়ই বলবে।