নয়াদিল্লি: জাকির নায়েকের এনজিও ইসলামিক রিসার্চের বিদেশি অর্থ পাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে কেন্দ্র। শীঘ্রই তাদের তহবিলে বিদেশি অনুদান আসায় নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে (এফসিআরএ) ওই সংস্থার রেজিস্ট্রেশন বাতিল করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত শো কজ নোটিস দেওয়া হবে জাকিরের সংস্থাকে।


আইআরএফ এডুকেশনাল ট্রাস্ট নামে জাকিরের অপর একটি এনজিও-কেও আগাম সম্মতি সংক্রান্ত ক্যাটেগরিতে ফেলার প্রক্রিয়া চলছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে। যার অর্থ, সরকারের আগাম অনুমতি ছাড়া কোনও বিদেশি অর্থ-অনুদান গ্রহণ করতে  পারবে না তারা।

সরকারি সূত্রে প্রকাশ, বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে দেখা গিয়েছে, সমাজ সেবামূলক কাজের জন্য পাওয়া অর্থ যুবকদের মগজ ধোলাই করে উগ্র মৌলবাদী ভাবনাচিন্তার দিকে ঠেলে দেওয়া, তাদের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে সামিল হতে ‘উদ্বুদ্ধ করার’ কাজে লাগাচ্ছেন জাকির।

ঘটনাচক্রে, জাকিরের বিরুদ্ধে একাধিক সংস্থার তদন্ত সত্ত্বেও গত সেপ্টেম্বরে বিদেশি অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে জাকিরের আইআরএফ-এর রেজিস্ট্রেশন রিনিউ করে দেওয়া হয়। বলা হয়, ভুল  করে এটা করা হয়েছে। তবে এর জেরে  সাসপেন্ড হতে হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক যুগ্ম সচিব ও আরও চার কর্তাকে।

আইআরএফ-কে সন্ত্রাস দমন আইন ইউএপিএ-তে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসাবে ঘোষণার প্রস্তুতিও চলছে। এ ব্যাপারে শুধু কেন্দ্রের সম্মতিটুকু পাওয়াই বাকি রয়েছে। মহারাষ্ট্র পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া নানা তথ্য, সূত্রের ভিত্তিতে তৈরি একটি খসড়া নোটে প্রকাশ, জাকির বারবার প্ররোচনামূলক ভাষণ দিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদী প্রচারে সামিল হয়েছেন। এ ব্যাপারে যুবকদের মৌলবাদী ভাবনাচিন্তায় সামিল করে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে প্ররোচিত করায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধ মামলাও দায়ের করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশ। এও অভিযোগ যে, ‘আপত্তিকর’ অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য আইআরএফের তহবিলে আসা বিদেশি অর্থ  নিজের পিস টিভিতে ঢেলেছেন জাকির। ভারতে তৈরি হওয়া বেশিরভাগ অনুষ্ঠানেই থাকত জাকিরের উগ্র ঘৃণা ছড়ানো ভাষণ, যাতে তিনি ‘সব মুসলিমকে সন্ত্রাসবাদী হওয়ার ডাক দিতেন’ বলে অভিযোগ।

প্রসঙ্গত, জাকিরের নাম সর্বসমক্ষে আসে গত জুলাইয়ে বাংলাদেশের গুলশন কাফে সন্ত্রাসবাদী হামলার সূত্রে। ১ জুলাই ঢাকার অভিজাত পাড়ায় ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলায় জড়িত জঙ্গিদের একজন, রোহন ইমতিয়াজ জাকিরের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ফেসবুক পোস্টে তাঁকে উদ্ধৃত করে প্রচার চালিয়েছিল বলে জানায় বাংলাদেশের ‘ডেইলি স্টার’ সংবাদপত্র। তারপরই তাঁর কার্যকলাপ, নেটওয়ার্ক নিয়ে খোঁজখবর করা শুরু হয় এ দেশে।