নয়াদিল্লি:  পরমাণু জ্বালানি সরবরাহ গোষ্ঠী বা এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিপরীতে ‘শর্ত’ রাখল চিন। বেজিংয়ের দাবি, ভারতকে সদস্য করতে হলে পাকিস্তানকেও জায়গা দিতে হবে।


মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে এনএসজি ‘বিবাদ’ সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনায় বসেছিলেন দুদেশের প্রতিনিধিরা।

সূত্রের খবর, সেখানে চিন জানিয়েছে, গোষ্ঠীতে ভারতের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে তারা রাজি, তবে পরিবর্তে পাকিস্তানকেও জায়গা দিতে হবে।

জানা গিয়েছে, চিনের এই ‘ঔদ্ধত্যপূর্ণ’ এবং ‘অবিবেচক’ দাবি সমর্থন করেনি ভারত। যার জেরে বৈঠক কার্যত ভেস্তে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, বৈঠকে চিন জানিয়েছে, ভারতের মাধ্যমে তারা এনএসজি-কে এই বার্তা পাঠাতে চায় যে, নতুন সদস্যপদ গ্রহণের ক্ষেত্রে নিয়ম শিথিল করা হলে তা উভয়ক্ষেত্রে (পড়তে হবে পাকিস্তান) প্রযোজ্য করতে হবে।

বেজিং জানিয়েছে, তারা চায় নতুন সদস্যপদ গ্রহণের ক্ষেত্রে দ্বিস্তরীয় কৌশল অবলম্বন করুক এনএসজি।

প্রথমত, যে সব দেশ পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ চুক্তি (এনপিটি) স্বাক্ষর করেনি, তাদের অন্তর্ভুক্তির জন্য নিরপেক্ষভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।

এই পদক্ষেপ গৃহীত হলে তারপর দ্বিতীয় স্তরে প্রত্যেক দেশের জন্য পৃথক কৌশল অবলম্বন করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে চিন।

ভারতীয় কূটনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, এই ‘শর্তের’ মাধ্যমে চিন পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিল যে, এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তিতে ইচ্ছুক নয় বেজিং।

প্রসঙ্গত, ৪৮-সদস্য বিশিষ্ট এনএসজি-র নিয়মাবলিতে বলা হয়েছে, কোনও দেশ যদি এনপিটি-তে স্বাক্ষর না করে, তাহলে সেই সংশ্লিষ্ট দেশ গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না।

যদিও, ২০০৮ সালে ভারতের অন্তর্ভুক্তির পথ প্রশস্ত করতে এই শর্ত বিশেষভাবে মকুব করার সিদ্ধান্ত নেয় এনএসজি।

এরপরই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অসামরিক পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করে ভারত। পরবর্তীকালে ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া এবং কানাডার সঙ্গেও একইভাবে অসামরিক পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়।

এনএসজি-র এই এনপিটি শর্তকে হাতিয়ার করেই মূলত গত জুন মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোলে এনএসজি-র প্লেনারিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তিকে আটকে দেয় চিন।

বেজিং জানিয়ে দেয়, এনএসজি-তে ভারতের মত অ-এনপিটি রাষ্ট্রকে অন্তর্ভুক্ত করা হলে, সেক্ষেত্রে একইভাবে পাকিস্তানকেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

এদিন সেই একই কথা ফের জানাল চিন।