কেদারনাথ (উত্তরাখণ্ড): কেদারনাথ দর্শনে গিয়ে কংগ্রেসকে আক্রমণ নরেন্দ্র মোদীর। কেদারনাথ মন্দিরে পুজো দিয়ে এও বললেন, এই দর্শনের ফলে তাঁর দেশসেবার শপথ আরও জোরদার হল।

কেদারপুরীতে এদিন ৫টি বড় পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মোদী। এগুলির মধ্যে আছে দর্শনার্থীদের জন্য আরও উন্নত পরিষেবা, মন্দাকিনী ও সরস্বতী নদীর পাড় ও ঘাট বাঁধিয়ে দেওয়া, মন্দিরের যাওয়ার রাস্তা তৈরি ও ২০১৩-য় প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আদিগুরু শঙ্করাচার্যের সৌধের পুনর্নির্মাণ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলি বিরাট, ব্যয়সাপেক্ষ হলেও যাতে সময়মতো সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয়, সেজন্য অর্থের কোনও ঘাটতি হবে না।

প্রধানমন্ত্রীর দাবি, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে তিনি ২০১৩-র বিধ্বংসী প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মন্দির সংলগ্ন এলাকা নতুন করে গড়ে তোলার ভার নিতে চেয়েছিলেন। বিভিন্ন রাজ্য থেকে উত্তরাখণ্ড যাওয়া লোকজনের ভেসে যাওয়া, কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু দেখে তিনি চুপ থাকতে পারেননি। রাজ্যের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রীকে কেদারনাথের পুনর্নির্মাণের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দিলে, মুখ্যমন্ত্রীও নীতিগত ভাবে সম্মতি দেন।

মোদী বলেন, উত্তেজনার মাথায় মিডিয়াকে বিষয়টা জানাই। ঘন্টাখানেকের মধ্যেই টিভি চ্যানেলগুলি ফলাও করে খবর করে। দিল্লিতে হইচই শুরু হয়ে যায়। কেন্দ্রের তত্কালীন ইউপিএ সরকার ভয় পেয়ে যায়, গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী এই বুঝি কেদারনাথ চলে গেলেন! আমার প্রস্তাবে রাজি না হতে রাজ্য সরকারকে দিল্লি থেকে চাপ দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীরও উপায় ছিল না, তিনি দ্রুত বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেন, গুজরাত সরকারের সাহায্যের দরকার নেই। কিন্তু ভগবান শিব বোধহয় কেদারনাথের পুনর্নির্মাণ যজ্ঞের ভার নেওয়ার জন্য আর কেউ নয়, আমাকেই বেছেছিলেন।

ঘটনাচক্রে উত্তরাখণ্ডের তখনকার মুখ্যমন্ত্রী বিজয় বহুগুনা ছিলেন কংগ্রেসে, বর্তমানে তিনি বিজেপিতে।

রাজনীতিতে নামার আগে কেদারনাথের কাছে গারুরছাত্তিতে থাকার প্রসঙ্গ তুলে স্মৃতিভারাক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষণ ছিল সে সময়টা। এই মাটিতেই চিরকাল থাকার বাসনা ছিল। কিন্তু ভগবান শিব হয়তো চাননি, গোটা জীবনটা একজন বাবার চরণসেবায় কাটাই, আমায় ১২৫ কোটি ভারতবাসীর সেবায় পাঠালেন, কেননা তাদের সেবাই আসল ঈশ্বরসেবা।

শীতের মরসুম বলে ৬ মাস বন্ধ থাকার পর গত মে মাসে কেদারনাথ মন্দির ভক্তদের জন্য ফের খুলে দেওয়া হলে দর্শনে এসেছিলেন মোদী।