নয়াদিল্লি:  অরুণাচল প্রদেশে ব্রহ্মস ক্ষেপানাস্ত্র মোতায়েন নিয়ে ভারতকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছিল চিন। কিন্তু চিনের ওই হুঁশিয়ারি খারিজ করে দিল ভারতের সেনা বাহিনী। সেনা স্পষ্ট করে দিয়েছে, এই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে বেজিংয়ের আপত্তি কোনও প্রভাব ফেলবে না। সেনা সূত্রে একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে বলা হয়েছে, কোথায় আমাদের কতটা বিপদ ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ রয়েছে, তা একান্তই আমাদের নিজস্ব বিষয়।এই সমস্যা মোকাবিলায় আমাদের সাজসরঞ্জাম আমাদের একালায় কোথায় মোতায়েন করব, তা আমরাই ঠিক করব। নিজেদের এলাকায় আমরা সামরিক পরিকাঠামো কী ভাবে গড়ে তুলব, তা অন্য কারুর উদ্বেগের কারণ হওয়া উচিত নয়।


চিনের সামরিক বাহিনীর মুখপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, সীমান্তে ভারত সুপারসনিক মিসাইল মোতায়েন করছে। আর এই মোতায়েন ভারতের আত্মরক্ষার প্রয়োজনীয়তাকে ছাপিয়ে গিয়েছে। অরুণাচলের সীমান্তে ভারত যে ভাবে বিপুল সংখ্যক সুপারসনিক ক্রুজ মিসাইল ভারত মোতায়েন করছে, তা চিনের দু’টি প্রদেশ-তিব্বত ও ইউনানের জন্য বিপজ্জনক।

ভারত-রুশ যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বর্তমানে পৃথিবীর সেরা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র। ভূমি থেকে তো বটেই, যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিন থেকেও এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা যায়। ৩০০ কেজি পর্যন্ত ওজনের ওয়ারহেড বয়ে নিয়ে যেতে পারে এবং জল বা স্থলের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। বর্তমানে বায়ুসেনার সুখোই-৩০এমকেআই যুদ্ধবিমান থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার পরীক্ষা চলছে।

এই ক্ষেপনাস্ত্রের সাম্প্রতিক সংস্করণ নিয়ে একটি নয়া রেজিমেন্ট সাজিয়ে তোলার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। এরজন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪,৩০০ কোটি টাকা। ব্রহ্মস নিয়ে ইতিমধ্যেই সফল ভাবে আকাশে ওড়ার পরীক্ষাতেও উতরে গিয়েছে ভারত। শব্দের বেগের চেয়ে প্রায় তিন গুণ গতি ব্রহ্মসের। এই ক্ষেপণাস্ত্রের আধুনিকতম রূপটিকে এখন দ্রুত তুলে দেওয়া হচ্ছে সেনাবাহিনীর হাতে। হিমালয় বরাবর বিভিন্ন সীমান্তে তা মোতায়েন করা হচ্ছে। ব্রহ্মসের এই আধুনিকতম রূপটি অ্যাডভান্সড গাইডেন্স সিস্টেমে সমৃদ্ধ। ফলে পর্বতের আড়ালে লুকিয়ে থাকা লক্ষ্যবস্তুতেও চূড়ান্ত নির্ভুল আঘাত হানতে পারে ব্রহ্মস। সেনার নয়া রেজিমেন্টে থাকছে ১০০ টি ক্ষেপনাস্ত্র, পাঁচটি লঞ্চার এবং হেভি ডিউটি ট্রাক।

উল্লেখ্য, অরুণাচলে চিন-ভারত সীমান্ত নিয়ে বিতর্ক রয়েছে।এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্রহ্মস ক্ষেপনাস্ত্র মোতায়েন উদ্বেগ বাড়িয়েছে চিনের। ভারত সম্প্রতি বিভিন্ন নতুন রাস্তা তৈরি, পাহাড়ি উপত্যকায় এয়ারস্ট্রিপ তৈরির মাধ্যমে সীমান্ত প্রতিরক্ষাকে শক্তিশালী করছে। এরফলে সেনাবাহিনীর সীমান্তে যাতায়াত অনেক সহজ হয়েছে।