নয়াদিল্লি: নির্বাচন কমিশনের সুপারিশ মানলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। নিয়মবিধি ভেঙে লাভজনক পদে থাকায় কমিশনের প্রস্তাবমতো ২০ আমআদমি পার্টি (আপ) বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করলেন তিনি। ওই ২০ জন বিধায়ক পদ খোয়ালেন। ফলে ধাক্কা খেলেন মুখ্য়মন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল।

যদিও কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন তিনি। ২০ দলীয় বিধায়কের সদস্যপদ খারিজের সিদ্ধান্তকে বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেন তিনি। নজফগড়ে এক জনসভায় তিনি বলেন, ওরা আমাদের হেনস্থার চেষ্টা করেছে। আমাদের বিধায়কের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা করেছে। সিবিআই তল্লাসির মাধ্যমে আমাকে নিশানা করেছে। কিন্তু কিছুই না পেয়ে আমাদের ২০ বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ করল। আমি সবসময় বলি, সত্যের পথে চললে বাধা আসবেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় হয় সত্যেরই।
নির্বাচন কমিশনের চরম অসাংবিধানিক, অনৈতিক, পক্ষপাতদুষ্ট সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দল উচ্চতর আদালতে যাবে বলে জানান কেজরীবাল। বলেন, প্রয়োজনে যাব সুপ্রিম কোর্টেও। সংবিধানই সবার ওপরে, সেটাই দেশের আইন। বারবার তাকে রক্ষা করেছে আমাদের বিচার বিভাগ।
তিনি ট্যুইট করেও বলেন, ঈশ্বর নিশ্চয়ই কোনও কারণ বশতই আমাদের ৬৭ জন বিধায়ক দিয়েছেন। তিনি প্রতিটি পদক্ষেপে আপের পাশে আছেন, নইলে এটা আমাদের উপলব্ধির বাইরে ছিল। শুধু সত্যের পথে অটল থাকুন, সরবেন না।




আপ নেতা আশুতোষ দলীয় বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজের পদক্ষেপকে 'অসাংবিধানিক'', গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক' আখ্যা দিয়েছেন।

জানা গিয়েছে,   লাভজনক পদ সংক্রান্ত নিয়ম ভাঙায় তাঁদের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ। নিয়ম হল, জনপ্রতিনিধিরা এমন কোনও সরকারি পদে থাকতে পারবেন না, যাতে নানা সুযোগসুবিধা বা ক্ষমতা মেলে, যদি না সেই পদকে লাভজনক পদের আওতার বাইরে রাখতে আইন পাশ হয়।
রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কমিশনের মতামতের মাপকাঠিতে দিল্লি বিধানসভার ২০ সদস্যের পদ খারিজ করা হয়েছে। ওই আপ বিধায়করা সংসদীয় সচিব পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন। এই নিয়োগের ফলে তাঁরা লাভজনক পদ পেয়েছেন বলে দাবি করে পিটিশন দিয়েছিলেন জনৈক আবেদনকারী। সেই দাবিকে স্বীকৃতি দিয়ে নির্বাচন কমিশন গত শুক্রবারই রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ পাঠায়, খারিজ করা হোক দিল্লির শাসক দলের ২০ বিধায়কের সদস্যপদ। পাল্টা ২০ বিধায়কই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। নির্বাচন কমিশনের সুপারিশকে চ্যালেঞ্জ জানান। যদিও বিচারপতি রেখা পাল্লি কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ জারি করতে অস্বীকার করে।

রাষ্ট্রপতি ভবনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশনের মতামতের আলোয় বিষয়টি খতিয়ে দেখে আমি, ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এই সিদ্ধান্তে এলাম যে, দিল্লি বিধানসভার ওই ২০ বিধায়ক ওই বিধানসভার সদস্য থাকার অধিকার হারিয়েছেন।

ধাক্কা খেলেও কেজরীবালের আপের দিল্লি বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতায় আঁচ লাগছে না।৭০ সদস্যের বিধানসভায় আপের সদস্য ৬৬ জন। এবার সংখ্যাটা কমে ৪৬ হচ্ছে, যা ক্ষমতা ধরে রাখার ন্যূনতম শক্তি ৩৫-এর যথেষ্ট বেশি।

রাষ্ট্রপতির এদিনের পদক্ষেপে ২০ বিধায়ক যে কেন্দ্রগুলি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানে ফের নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। নির্বাচন হওয়া মানে বিজেপি, কংগ্রেসের সামনে শক্তি বাড়ানোর সুযোগ। বর্তমান বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক ৪ জন, কংগ্রেসের শূন্য।