নয়াদিল্লি: পাকিস্তানে কুলভূষণ যাদবের মা ও স্ত্রীকে হেনস্থা, সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনন্ত কুমার হেগড়ের বিতর্কিত মন্তব্য নিয়ে বিরোধীদের হট্টগোলে আজ ফের উত্তাল হয়ে উঠল রাজ্যসভা ও লোকসভা। দফায় দফায় মুলতুবি করে দিতে হয় অধিবেশন। লোকসভায় কোনও কাজই করা যায়নি।

কংগ্রেস সাংসদ কপিল সিব্বল বলেছেন, ‘কুলভূষণ যাদবের মা ও স্ত্রীর সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে সেটা লজ্জাজনক। আমরা পাকিস্তানের কাছ থেকে ভাল কিছু আশা করতে পারি না।’ সমাজবাদী পার্টি সাংসদ নরেশ অগ্রবাল বলেছেন, ‘পাকিস্তান যদি তাদের দেশে কুলভূষণ যাদবকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে মনে করে, তাহলে তাঁর সঙ্গে এই ধরনের ব্যবহারই করবে। আমাদের দেশেও সন্ত্রাসবাদীদের প্রতি কড়া মনোভাব দেখিয়ে একই আচরণ করা উচিত।’ বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছেন, আগামীকাল তিনি কুলভূষণের বিষয়ে বিবৃতি দেবেন।

আজ রাজ্যসভার অধিবেশন শুরু হতেই কংগ্রেস, সপা ও বসপা সাংসদরা ওয়েলে নেমে এসে হেগড়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তাঁরা হেগড়েকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। ফলে চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডু দুপুর বারোটা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতুবি করে দেন। অধিবেশন ফের শুরু হতে বিরোধী বিক্ষোভের একই ছবি দেখা যায়। ফলে আবার মুলতুবি করে দিতে হয় অধিবেশন।

লোকসভাতেও বিরোধীদের বিক্ষোভের ছবি দেখা যায়। হেগড়ের মন্তব্যের নিন্দা করেন বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিন বলেন, হেগড়ের এই মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না। তিনি সংবিধানের প্রণেতা বি আর অম্বেদকরকেও অপমান করেছেন। কংগ্রেস সাংসদরা ওয়েলে নেমে দাবি করেন, অম্বেদকরের অপমান চলবে না। হেগড়েকে সরিয়ে দিতে হবে।

খাড়গের এই মন্তব্যের জবাবে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অনন্ত কুমার দাবি করেন, ‘হেগড়ের মন্তব্য বিকৃত করছেন খাড়গে। কংগ্রেস ছদ্ম ধর্মনিরপেক্ষ। ওরা বাবাসাহেব অম্বেদরকে ভোটে লড়তে দেয়নি। তাঁকে জনসঙ্ঘই রাজ্যসভায় এনেছিল। সরকার অম্বেদকরের ইতিহ্য রক্ষার জন্য অনেক পদক্ষেপ করেছে। বি আর অম্বেদকর সংবিধানের জনক। আমরা তাঁকে শ্রদ্ধা করি। প্রধানমন্ত্রী সংবিধানকে রাষ্ট্রীয় গ্রন্থ বলে উল্লেখ করেছেন। আমরা সংবিধান ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি দায়বদ্ধ। কংগ্রেস যেন আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতার বিষয়ে জ্ঞান না দেয়।’