নয়াদিল্লি: প্রশাসনিক কায়দায় নয়, বরঞ্চ রাজনৈতিকভাবে বর্তমান কাশ্মীর সমস্যার সমাধান সূত্র খুঁজে বের করতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বোঝানোর জন্য রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে আবেদন করলেন কাশ্মীরের বিরোধী নেতারা। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার নেতৃত্বে বিরোধী শিবিরের ২০ জন নেতার প্রতিনিধিদলটি ঘণ্টাখানেক কথা বলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে ওমর সাংবাদিকদের বলেন, কাশ্মীর সমস্যার চরিত্র যে প্রধানতঃ রাজনৈতিক, এটা বুঝতে ব্যর্থ কেন্দ্রের সরকার। আর তার ফলে আগে থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠা কাশ্মীরের পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।


তিনি বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে আবেদন করলাম যাতে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে আর বিলম্ব না করে রাজ্যের রাজনৈতিক ইস্যুটির সমাধানে সংশ্লিষ্ট সব মহলের সঙ্গে সদর্থক ও বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক আলোচনা প্রক্রিয়া শুরু করতে বোঝানোর উদ্যোগ নেন। ওমরের অভিমত, কেন্দ্র রাজনৈতিক উদ্যোগের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামলাতে লাগাতার অস্বীকার করে চলেছে। এটা হতাশাজনক। রাজ্যের শান্তি, স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদে এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে। এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জি এ মীর, সিপিএম বিধায়ক এম ওয়াই তারিগামি, নির্দল এমএলএ হাকিম ইয়াসিনকে পাশে রেখে ওমর বলেন, গত ৪২ দিন ধরে কাশ্মীরে জ্বলতে থাকা আগুন ইতিমধ্যে জম্মু ও কার্গিল এলাকার পীর পাঞ্জাল, চেনাব উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। আমি তো বিস্মিত হয়ে যাচ্ছি, পরিস্থিতি এখনই বেশ চিন্তার। কবে ওদের ঘুম ভাঙবে! তিনি নিশানা করেন কেন্দ্র, রাজ্যের সরকারকে। বলেন, ওরা পেট্রল, অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ করার মতো ‘প্রশাসনিক পদক্ষেপের মাধ্যমে আন্দোলন ভাঙার চেষ্টা করছে’।

ওমরের দাবি, যে পদক্ষেপগুলি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কেন্দ্র, রাজ্যের নেওয়ার কথা, সেগুলি নিচ্ছে বিরোধী দলগুলি। তারাই সরকারকে চাপ দিয়ে সংসদে বিতর্কে রাজি করিয়েছে। তারাই রাজ্য সরকারকে সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান বের করতে চাপ দিচ্ছে। ওমর হুঁশিয়ারি দেন, সার্বিক ও লাগাতার রাজনৈতিক উদ্যোগের মধ্য দিয়ে রাজ্যের মানুষের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলতে দেরি হয়েই চললে উপত্যকায় বিচ্ছিন্নতা বোধ আরও তীব্র হবে, আগামী প্রজন্মের ওপর অনিশ্চয়তার ছায়া ফেলবে।