নয়াদিল্লি: সীমান্তের উত্তাপ কাঁটা বিছিয়েছে ব্যক্তিগত সম্পর্কে। ভারতে আসার ভিসা মঞ্জুর হয়নি পাকিস্তানি বন্ধুর। কনের সাজ পরার আগে এক ভারতীয় তরুণী চাইছেন, সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু যেন বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকতে পারেন। কিন্তু ভিসার আর্জি খারিজ হওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না।এজন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পেশায় সাংবাদিক পূরবী থ্যাকার। তাঁর ট্যুইট তিনি বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকেও ট্যাগ করেছেন।
ট্যুইটারে কোনও সমস্যায় পড়লে এর আগে বিভিন্ন সমস্যার কথা জেনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন সুষমা। কিন্তু এক্ষেত্রে সুষমার কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। পাকিস্তানের মেয়েদের কিছু দিন আগেই সুষমা বলেছিলেন, ‘তোমরা আমারও মেয়ে।’ কিন্তু এ বার সেই তিনিই পূরবীর বন্ধু এক পাক তরুণীর ভারতে আসার ভিসা আটকে গিয়েছে জেনেও নীরব রয়েছেন।


তোমরা আমারও মেয়ে! ভারত সফরে আসা পাক কিশোরীদের মন জিতলেন সুষমা

পূরবীর ট্যুইটের উত্তরে কংগ্রেস নেতা শশী তারুর লিখেছেন, ‘সুষমা স্বরাজ কবে লাল ফিতের ফাঁস খুলবেন, সেই দিন গোনা হচ্ছে। যিনি ইতিমধ্যেই দুবার ভারতে এসেছেন, তিনি কখনই বিপজ্জনক হতে পারেন না। আপনার বিয়ের জন্য শুভেচ্ছা’।
পূরবী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমার আর সারা মুনিরের বন্ধুতা কতটা গভীর যাঁরা জানেন, তাঁরা বুঝতে পারবেন যে, ওর ভিসার আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ায় আমরা কতটা ভেঙে পড়েছি’।
পূরবী জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরে তাঁর বিয়ে। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতে আসার জন্য ভিসার আবেদন করেছিলেন সারা।
পূরবী লিখেছেন, ‘জীবনের সবচেয়ে বড় দিনে আমার প্রিয় বন্ধু আসতে পারবে না, এটা মানতেই পারছি না। কাগজপত্রের জটিলতা, মাসের পর মাস অপেক্ষা, এত কিছু পেরিয়ে শেষমেশ ভিসা হল না!ভাবতেই পারিনি যে ও ভিসা পাবে না’।
ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতপূর্ণ ইতিহাসের কথা স্বীকার করেও পূরবী চান, মানুষের মধ্যে সম্পর্কের মাঝে সীমান্তের কাঁটাতার যেন বিভেদের প্রাচীর না হয়ে ওঠে।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা দু’জন সীমান্তের দু’প্রান্তে জন্মেছি বলে বন্ধুত্বটা কঠিন হয়ে যায় না। আমাদের দুই দেশের ইতিহাসের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে গভীর প্রভাব রয়েছে। আর তা ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও যোগাযোগের ওপরেও প্রভাব ফেলেছে। এ কথা তো কেউ ভাবে না’।
উল্লেখ্য, উরির সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলার পর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে পাকিস্তানকে তুলোধুনো করলেও পাকিস্তানি মেয়েদের সস্নেহে ‘আমারও মেয়ে’ বলেছিলেন সুষমা।
একাদশ বিশ্ব যুব শান্তি উৎসবে অংশগ্রহণ করতে সাতদিনের ভারত সফরে এসেছিল পাকিস্তানের ১৯ জন পাক কিশোরী। পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের ঠিক একদিন আগে তারা রাজধানীতে আসে। দুদেশের সম্পর্কের উত্তেজনার মধ্যে ওই কিশোরীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সুষমা। পাক কিশোরীদের কাছে ‘সুপারমম’ হয়ে উঠেছিলেন সুষমা।
পাক বান্ধবীর ভিসা মঞ্জুরে সুষমা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন কিনা, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছেন পূরবী।