লখনউ: সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো মুলায়ম সিংহ যাদবের মধ্যস্থতায় আপাতত দল ও সরকারের অভ্যন্তরীণ বিবাদ মিটতে চলেছে। যুযুধান দু পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রফাসূত্র বার করেছেন মুলায়ম। সেই রফা অনুযায়ী, শিবপাল যাদবের হাতে থাকা দফতরগুলি ফিরিয়ে দিচ্ছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব। তিনি নিজেই ট্যুইট করে এই খবর জানিয়েছেন। একইসঙ্গে গায়ত্রী প্রজাপতিকে মন্ত্রিসভায় আনা হচ্ছে। ফলে উত্তরপ্রদেশে শাসক দলের সঙ্কট কাটতে চলেছে।


শুক্রবার সকালে গত পাঁচ দিনের নীরবতা ভঙ্গ করে পারিবারিক দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খোলেন মুলায়ম। তিনি বলেন, ‘আমি বেঁচে থাকতে দল ভাগ হবে না।’ শিবপালের সঙ্গে অখিলেশের কোনও লড়াই নেই বলেও দাবি করেন সপা সুপ্রিমো। তিনি দু জনের সঙ্গেই আলাদা করে বৈঠক করেন। এরপরেই অশান্তি মিটে যায়।

উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের আর বেশি দেরি নেই। তার আগে শাসক শিবিরের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে চাপে পড়ে গিয়েছিলেন মুলায়ম, অখিলেশরা। গত কয়েকদিন ধরে পরস্পর-বিরোধী মন্তব্য এবং পদক্ষেপ বিরোধ বাড়িয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি ক্রমশঃ হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে নড়েচড়ে বসেন মুলায়ম। তাঁর দৌত্যেই সমস্যা মিটল।

অখিলেশ এদিন বাধ্য পুত্রের মতো মুলায়মের নির্দেশ মেনে চলার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি ছেলে হিসেবেও আমার দায়িত্ব আছে। দলীয় সভাপতির সব নির্দেশ আমি মেনে চলব এবং বাবাকে খুশি করার জন্য সবকিছু করব।’

দলীয় বিবাদ প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘পদের জন্য লড়াই চলছে। যদি কোনও ভাল মানুষ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তাহলে আমি এই পদ ছেড়ে দিতে রাজি। নির্বাচনের আগে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রামগোপাল যাদব, অখিলেশ ও শিবপালের মধ্যে কোনও লড়াই নেই। নেতাজির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সমাজবাদী পার্টি একটি পরিবার। এখানে কোনও বিরোধ নেই।’

তবে রফাসূত্র বেরোলেও, লড়াই যে পুরোপুরি বন্ধ হয়নি তা অখিলেশ এবং শিবপালের মন্তব্যে বোঝা গিয়েছে। অখিলেশ এদিনও দলের রাজ্যসভার সাংসদ অমর সিংহকে বহিরাগত বলে উল্লেখ করে এই অশান্তির জন্য তাঁকেই দায়ী করেছেন। অখিলেশ চাইছেন, উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে তাঁর মতামতকে গুরুত্ব দিক দল। শিবপাল আবার অমরের পাশে দাঁড়িয়ে অখিলেশকে অহং পরিত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। শিবপাল চাইছেন, বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে একমাত্র মুলায়মের মতামতকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হোক।