নয়াদিল্লি: সোহরাবুদ্দিন শেখ এনকাউন্টার মামলার শুনানি করা বিশেষ সিবিআই বিচারক বি এইচ লোয়ার রহস্যজনক মৃত্যু সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বম্বে হাইকোর্ট ও তাদের নাগপুর বেঞ্চে বকেয়া পড়ে থাকা দুটি পিটিশন বদলি করিয়ে নিজের হাতে নিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৪ সালে মারা যান লোয়া। পাশাপাশি লোয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত যেসব তথ্য এখনও পেশ হয়নি, সেগুলি সব একসঙ্গে তালিকাভুক্ত করে ২ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন তাদের সামনে জমা দিতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। বিচারপতি এ এম খানবিলকর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ও এই বেঞ্চে আছেন।
দুটি পিটিশনে ওঠানো ইস্যুগুলিকে 'সিরিয়াস' বা 'গুরুতর' বলে উল্লেখ করে বেঞ্চ বলে, চূড়ান্ত গুরুত্ব দিয়ে যাবতীয় নথি পরীক্ষা করে দেখতে হবে আমাদের। বেঞ্চ দেশের সব হাইকোর্টকে লোয়ার মৃত্যুর ব্যাপারে নতুন করে কোনও পিটিশন গ্রহণ করা থেকেও বিরত রেখেছে।
এদিন শুনানি পর্বে বম্বে হাইকোর্টে জনস্বার্থ পিটিশন দায়ের করা বম্বের আইনজীবী সংগঠনের কৌঁসুলি সিনিয়র অ্যাডভোকেট দুষ্যন্ত দাভে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের নাম তোলায় প্রবল উষ্মা প্রকাশ করে বেঞ্চ। অমিত শাহকে বাঁচাতে কোনও চেষ্টাই বাদ রাখা হয়নি বলে অভিযোগ করেন দাভে। পাল্টা মহারাষ্ট্র সরকারের কৌঁসুলি হরিশ সালভে এতে তীব্র আপত্তি করেন। তাঁর বিরোধিতা মাথায় রেখে বেঞ্চ বলে, আজকের দিন পর্যন্ত, লোয়ার মৃত্যু স্বাভাবিক ঘটনা। সুতরাং, কুৎসা, কটাক্ষ করবেন না।
শুনানির সময় সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইন্দিরা জয়সিংহ এই মামলা সংক্রান্ত খবর প্রকাশে সর্বোচ্চ আদালত মিডিয়ার ওপর বিধিনিষেধ জারি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করায় রেগে ওঠেন প্রধান বিচারপতি। বলেন, এটা আমার প্রতি অন্যায় হচ্ছে। আপনি এটা করতে পারেন না। তাঁর নির্দেশ মেনে ইন্দিরা মন্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চান।
প্রসঙ্গত, এর আগে বিচারপতি অরুণ মিশ্রের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ লোয়ার মৃত্যু সংক্রান্ত কংগ্রেস নেতা তেহসিন পুনাওয়ালা ও মহারাষ্ট্রের সাংবাদিক বি এস লোনের পেশ করা দুটি পিটিশনের শুনানি করা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়। বিষয়টি যথোপযুক্ত কোনও বেঞ্চে পাঠানো উচিত বলে অভিমত জানিয়েছিল ওই বেঞ্চ। সেই নির্দেশ অনুসারে আজ প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আজ শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয় দুটি পিটিশন।
প্রসঙ্গত, অতি গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলি শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি ঠিকমতো বিলিবন্টন করছেন না, সেগুলি জুনিয়র বিচারপতিদের বেঞ্চে পাঠাচ্ছেন বলে প্রকাশ্যে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র বিচারপতি জাস্তি চেলামেশ্বর, রঞ্জন গগৈ, এম বি লোকুর ও ক্যুরিয়েন জোসেফ, যা নিয়ে আলোড়ন হয় দেশে। সেই মামলাগুলির মধ্যে রয়েছে বিচারপতি লোয়ার মৃত্যুরহস্য মামলাটিও।