নয়াদিল্লি: একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভারতে জাত-পাতের রাজনীতিকে দুর্ভাগ্যজনক বলে আখ্যা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, উন্নয়নই তাঁর সরকারের লক্ষ্য। তাঁর সরকারের আর্থিক নীতির নিন্দা করার বদলে বিরোধীদের গঠনমূলক সমালোচনা করা উচিত। শুধু জিএসটি ও নোট বাতিল দিয়ে তাঁর আর্থিক নীতির বিচার করা উচিত নয়। লোকসভা, বিধানসভা, পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচন একসঙ্গে করার পক্ষেও সওয়াল করেছেন প্রধানমন্ত্রী।


১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশ করতে চলেছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। ২০১৯ সালে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের আগে এটাই মোদী সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাজেট থাকুক বা না থাকুক, নির্বাচন হোক বা না হোক, প্রথম বাজেট হোক বা শেষ বাজেট, মোদীর একটাই মন্ত্র, বিজেপি-র একটাই মন্ত্র, সেটা হল বিকাশ, বিকাশ, বিকাশ। সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। সেটার জন্য যা করা দরকার আমরা করে চলেছি এবং সেটাই করে যাব।’

জিডিপি-র হার কমে যাওয়া নিয়ে বিরোধীদের সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কারও সমালোচনাকে খারাপভাবে দেখা উচিত নয়। এটা গণতন্ত্রের শক্তি। সবকিছুই পর্যালোচনা করা উচিত। ভাল কাজের প্রশংসা এবং খামতির সমালোচনা করা উচিত। কিন্তু কখনও কখনও সমালোচনার বদলে অভিযোগই বেশি দেখা যায়। তবে দেশের মানুষ জিডিপি, কৃষির উন্নতি, শিল্পের উন্নতি এবং শেয়ার বাজার নিয়ে আলোচনা করছেন। এটা ভাল লক্ষণ।’

নিজের সরকারের কাজের প্রশংসা করে মোদী বলেছেন, ‘যদি আমার সরকারের শুধু দু’টি কাজের (জিএসটি ও নোট বাতিল) বিচার করা হয়, তাহলে অন্যায় হবে। মানুষকে ব্যাঙ্কের আওতায় নিয়ে আসা, চার লক্ষেরও বেশি স্কুলে শৌচাগার তৈরি, তিন কোটিরও বেশি পরিবারে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়া, গ্রামগুলিতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া, গরিবদের সস্তায় বিমার ব্যবস্থা করা, বিদ্যুতের খরচ বাঁচাতে এলইডি বাল্ব দেওয়া, পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগ সহ বহু কাজ করেছে আমার সরকার। ৭০ লক্ষ মানুষ প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রকল্পে নাম লিখিয়েছেন। মুদ্রা যোজনায় ১০ কোটি মানুষ ঋণ নিয়েছেন। বহু কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।’

সব নির্বাচন একসঙ্গে করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘যাতায়াত ব্যবস্থা, মালপত্র সরবরাহের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায়, আমাদের দেশে সবসময়ই নির্বাচনের পরিবেশ থাকে। একটা নির্বাচন শেষ হলেই অন্য একটি নির্বাচন শুরু হয়ে যায়। তাই একসঙ্গে সব নির্বাচন হওয়া উচিত। পাঁচ বছর অন্তর লোকসভা, বিধানসভা, পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচন হলে এবং সেটা একমাসের মধ্যে শেষ হয়ে গেলে সময়, খরচ, সম্পদ ও লোকবল বাঁচবে।’

মোদী আরও বলেছেন, ‘নির্বাচন হওয়া উচিত হোলি উৎসবের মতো। সংশ্লিষ্ট দিনে পরস্পরের দিকে রং, কাদা ছোড়ার পর পরবর্তী দিন পর্যন্ত সেটা আর যেন মনে না থাকে। সমান্তরালভাবে সব নির্বাচন করার বিষয়টি কোনও একটি দল বা ব্যক্তির স্বার্থের বিষয় নয়। দেশের স্বার্থে সবার একসঙ্গে কাজ করা উচিত। এ বিষয়ে আলোচনা হোক।’

২০১৯ সালের নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী কি না, এই প্রশ্নের জবাবে মোদী বলেছেন, ‘আমি নির্বাচন নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করি না। আমি ১২৫ কোটি মানুষের কথা ভাবি।’