নয়াদিল্লি:  ১৭ মে তৃতীয় দফার লকডাউনের মেয়াদ শেষের আগে  দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভাষণে ভারতকে আত্মনির্ভর হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন তিনি। তিনি বলেছেন, চলতি পরিস্থিতির কালক্রমে ভারতের নজরে দেখলে মনে হয় যে, ২১ শতক ভারতের, এটা দেশের স্বপ্নই নয়, সকলের দায়িত্বও।

মোদি বলেছেন, করোনা সংকটের মোকাবিলার পথে নতুন অঙ্গীকারের সঙ্গে একটি বিশেষ আর্থিক প্যাকজ ঘোষণা করা হচ্ছে। এই আর্থিক প্যাকেজ আত্মনির্ভর ভারত অভিযান-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে কাজ করবে। সম্প্রতি সরকার করোনা সংকট মোকাবিলা সংক্রান্ত যে আর্থিক ঘোষণা হয়েছিল এবং যা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত ছিল, তার সঙ্গে এদিনের প্যাকেজ যুক্ত করা হলে, তা হবে প্রায় ২০ লক্ষ কোটি টাকা। মোদি বলেন, এই আর্থিক প্যাকজ ভারতের মোট অভ্যন্তরীন উত্পাদন (জিডিপি)-র প্রায় ১০ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই আর্থিক প্যাকেজ বিভিন্ন ক্ষেত্রকে সাহায্য করবে। জমি, শ্রমিক ও নমনীয়তা ও আইনের ওপর এই প্যাকেজে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই প্যাকেজ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী অন্যন্য ক্ষেত্রের জন্য। এই প্যাকেজ কৃষক, শ্রমিক ও মধ্যবিত্ত শ্রেণী—যাঁরা কর দিয়ে ভারতের অগ্রগতিতে অবদান রাখেন—তাঁদের সবার জন্য।

এই আর্থিক প্যাকেজ দেশে বিরাট সংস্কার আনবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।  তিনি বলেছেন, কৃষিক্ষেত্রে সবচেয়ে  ক্ষতি যাতে কম হয়,এই প্যাকেজের মাধ্যমে চেষ্টা করা হবে । আর্থিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে মানবসম্পদের উন্নয়ন করতে হবে। এ ছাড়া ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্পে এই প্যাকেজ আরও উৎসাহ বাড়াবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বুধবার থেকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন প্যাকেজ সম্পর্কে বিস্তারিত ঘোষণা করবেন। তিনি বলেছেন, ফেরিওয়ালা, মত্স্যজীবীদের মতো দরিদ্র ও অন্যান্যদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করে তুলতে বড়সড় পদক্ষেপ নিতে হবে।
কুচের ভূমিকম্পের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের উঠে দাঁড়িয়ে নতুন পর্যায়ে পৌঁছনোর উদ্যম রয়েছে। তিনি বলেছেন, ভারতের ভিত্তি পাঁচ স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে। প্রথম হল অর্থনীতি, দ্বিতীয় পরিকাঠামো, যা সম্বৃদ্ধ ভারতের মুখচ্ছবি হয়ে উঠতে পারে। তৃতীয় হল আমাদের ব্যবস্থা-যা গড়ে উঠেছে প্রযুক্তি-চালিত ব্যবস্থাপনার ওপর ভিত্তি করে। চতুর্থ স্তম্ভ হল, দেশের শক্তিশালী গণতন্ত্র এবং পঞ্চম স্তম্ভ হল চাহিদা।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, দেশের যে শক্তি রয়েছে তার পূর্ণ ব্যবহারের প্রয়োজন রয়েছে।