আমদাবাদ:  আজ নিজের জন্মদিনে সর্দার সরোবর বাঁধের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী । দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাঁধ এটি। এই বাঁধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছিল ১৯৬১ সালে এবং ১৯৮৭ সালে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। জওহরলাল নেহরুর শুরু করা এই প্রকল্পের উদ্বোধন করে গোটা দেশবাসীকে এই বাঁধটি উৎসর্গ করলেন মোদী। আমদাবাদ থেকে দুশো কিমি দূরে বাঁধের উদ্বোধনের পর গুজরাতের দাভোইতে এক জনসমাবেশেও বক্তব্য রাখেন তিনি।





গুজরাতে কয়েক মাসের মধ্যেই রয়েছে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে এই বাঁধ নির্মাণের কাজ সঠিক সময় শেষ করে রাজ্য বিজেপি এই সাফল্যকে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করতে চায় বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল।



দ্য নর্মদা কন্ট্রোল অথোরিটি সর্দার সরোবর প্রকল্পটি গত ১৬ জুন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তারপরই বাঁধের দৈর্ঘ্য ১২১.৯২ মিটার থেকে বাড়িয়ে ১৩৮ মিটার করা হয়। বাঁধের ধারণ  ক্ষমতা ৪.৭৩ মিলিয়ন কিউবেক মিটার বাড়ানো হয়েছে। আগে এটাই ছিল ১.২৭ মিলিয়ন কিউবেক মিটার।



মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গ্র্যান্ড কাউলি বাঁধের পরেই রয়েছে ভারতের এই সর্দার সরোবর বাঁধ। ১.২ কিমি লম্বা এই বাঁধের গভীরত্ব ১৬৩ মিটার। এখনও পর্যন্ত এই বাঁধের দুটি পাওয়ার হাউস থেকে মোট ৪,১৪১ কোটি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। বাঁধ থেকে আয় হয়েছে ১৬ হাজার কোটি টাকা, যা নির্মাণ করার খরচের চেয়ে দ্বিগুন বেশি, খবর সূত্রের। বাঁধের প্রতিটি গেটের ওজন ৪৫০ টন এবং বন্ধ করতে প্রায় এক ঘণ্টা লাগে। এসএসএনএল সূত্রে খবর, এই বাঁধ থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, সেটা তিনটি রাজ্য মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাতের মধ্যে ভাগ হয়ে যায়। বাঁধ থেকে উৎপাদন হওয়া ৫৭ শতাংশ বিদ্যুৎ যায় মহারাষ্ট্রে, মধ্যপ্রদেশ পায় ২৭ শতাংশ এবং ১৬ শতাংশ পায় গুজরাত।



এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে অতীতে বহু বিতর্ক হয়েছে। নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনও এই বাঁধকে কেন্দ্র করেই শুরু। বিভিন্ন পরিবেশগত ক্ষতির কথা উল্লেখ করে সমাজকর্মী মেধা পটকর এই আন্দোলনকে জাতীয় স্তরে নিয়ে যান। ১৯৯৬ সালে সুপ্রিম কোর্ট এর নির্মাণের ওপর স্থগিতাদেশও দারি করে। পরে চার বছর বাদে ফের নির্মাণের কাজ শুরু হয় শীর্ষ আদালতের নির্দেশে।